শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১০:৩০ দুপুর
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১০:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কী হবে ঃ বিএনপি অনড় আ. লীগ কঠোর

ডেস্ক  রিপোর্ট  : নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে বিএনপির অনড় অবস্থানের কথাই প্রকাশ পেয়েছে গতকাল শনিবার দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিসহ ছয়টি শর্তের কথা বলেছেন তিনি। শর্ত দিয়েছেন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা এসব শর্ত নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়ার শর্তগুলো সংবিধানসম্মত নয়।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম  বলেন, নিরপেক্ষ সরকার বলে তিনি (খালেদা জিয়া) যে দাবি করেছেন, তা সংবিধান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। আসলে তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠান নয়, নির্বাচন ভণ্ডুল করে অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় আনতে চান। এ ধরনের বক্তব্য রেখে খালেদা জিয়া দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে সুবিধা নিতে চান। তাঁর কোনো ধরনের শর্তই গ্রহণযোগ্য নয়—যোগ করেন মোহাম্মদ নাসিম।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে। সে নির্বাচনে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। আর সেনাবাহিনী বা ইভিএম থাকবে কি না, তা ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অহেতুক কতগুলো শর্ত দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে তাঁর এ বক্তব্যে কেউ বিভ্রান্ত হবে না। কারণ খালেদা জিয়া এখন বিশ্ববাসীর কাছে দুর্নীতিবাজ নেত্রী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। জনগণ তাঁর পরামর্শ শুনতে চায় না।

ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে যে যে অবস্থানে ছিল, আজকে পর্যন্ত সেই অবস্থানেই রয়েছে পরস্পর বৈরী দল দুটি। আওয়ামী লীগ বর্তমান সাংবিধানিক ব্যবস্থার মধ্যেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখে বর্তমান সরকার কাঠামোর মধ্যেই দলটি একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে।

অন্যদিকে বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আসছে। গতকাল দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অন্য চারটি শর্ত হলো—জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আসার মতো পরিবেশ তৈরি করা, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করা, ভোটের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং ইভিএম ব্যবহার না করা।

অনেকের মতে, নির্বাচনের আগে ‘ছাড়’ দেওয়া অর্থ নমনীয় হওয়া। এই ‘নমনীয়’ যে হবে, রাজনীতিতে তারই পরাজয় হবে—এমন একটি ভাবনা বড় দুই দলের মধ্যেই কাজ করছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনাও আছে। তাই সরকার সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রেখেই নির্বাচন করতে চায়; উদ্দেশ্য হলো নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখা। অন্যদিকে বিএনপি একটু হলেও সরকারকে নড়াতে চায়। অর্থাৎ জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন একটি বার্তা তারা স্পষ্ট করতে চায় যে বিএনপির কাছে কিছুটা হলেও নতিস্বীকার সরকার করেছে।

তবে সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব হয়—এমন কোনো কথা গতকাল খালেদা জিয়ার বত্তৃদ্ধতায় পাওয়া যায়নি। তিনি হিংসা ও হানাহানি ভুলে দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমরা কখনো প্রতিহিংসা চরিতার্থ করব না।’ আগামী দিনেও বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক হবে বলে তিনি জানিয়েছেন, যদিও ওই কর্মসূচি এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, নির্বাচন ভণ্ডুল হতে পারে—এমন উসকানিমূলক কথা খালেদা জিয়া গতকাল সতর্কতার সঙ্গে পরিহার করেছেন। এর কারণ হলো, বৈরী পরিস্থিতির মধ্যেও বিএনপি নির্বাচনে টিকে থাকতে চায়। কারণ দলটির কাছে খবর আছে যে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার এক ধরনের কৌশল সরকারের রয়েছে।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত হিসেবে দলটির পক্ষ থেকে ওই দাবিগুলোর কথা আগেও বলা হয়েছে। কিন্তু গতকাল দলের নির্বাহী কমিটির সভায় সেগুলো আবার বলার মধ্যে অন্য তাৎপর্য রয়েছে বলে পর্যবেক্ষকমহল মনে করছে। কারণ, একটি দুর্নীতি মামলার রায় সামনে রেখে ওই কথাগুলো বলেছেন খালেদা জিয়া। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ধার্য থাকা ওই রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হবে কি না তা নিয়ে বিএনপির পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন চলছে। অনেকের আশঙ্কা, সাজা দিয়ে তাঁকে কারাগারে নেওয়া হতে পারে। সেই অবস্থায় দলের নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়াসহ রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি সামনে রয়েছে। ফলে দলের নির্বাহী কমিটির সভায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ওই বক্তব্যই বিএনপির সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থান বলে মনে করা হচ্ছে। দলটি মনে করে, ন্যূনতম দাবিদাওয়া আদায় ছাড়া নির্বাচনে গেলে একদিকে বিএনপির দুর্বলতা প্রকাশ পাবে, অন্যদিকে সরকার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচনে নীলনকশা বাস্তবায়ন করবে। আর এই বাস্তবতায় নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়া সমান কথা বলে মনে করে বিএনপি। এ ছাড়া বিগত ৫ জানুয়ারির মতো একই কাঠামোর নির্বাচনে কৌশলগত কারণেও এবারও যেতে পারছে না বিএনপি। সব মিলিয়ে তারা অনড় অবস্থানেই রয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন  বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনের বক্তব্যই বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান। বর্তমান সংসদ রেখে অথবা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ বহাল রেখে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, নিবন্ধন বাতিল হবে কি না এই চিন্তা বিএনপি করে না। কেননা একটি দলের রাজনীতি কেবল নিবন্ধন রক্ষার জন্য নয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখে এবং সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হবে না। সরকার সব কিছু তার ইচ্ছামতো সাজিয়ে বলবে নির্বাচনে আসো আর সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে অবৈধ সরকারকে বৈধতা দেওয়া বিএনপির কাজ নয়। তাঁর মতে, সরকার জেনেশুনেই সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি করতে চায়। জনগণ এ বিষয়ে সতর্ক আছে। কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়