শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৪৭ সকাল
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশে ১২ লাখ রোগীর চিকিৎসক মাত্র দেড়শ

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে প্রতিবছর দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ ক্যানসারে মারা যাওয়ার পাশাপাশি নতুন করে আক্রান্ত হয় আড়াই লাখ। অথচ তাদের চিকিৎসায় ক্যানসারবিশেষজ্ঞ রয়েছেন মাত্র দেড়শর মতো। চিকিৎসাকেন্দ্রের স্বল্পতা, যন্ত্রপাতির অভাব ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক সংকটের কারণেই মৃত্যুর হারটা বেশি। আর অনিরাপদ খাদ্য ও সচেতনতার অভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। জেলা হাসপাতালগুলোয় ক্যানসার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। মেডিক্যাল কলেজগুলোয়ও অপ্রতুল শয্যার সংখ্যা। এমনকি স্পর্শকাতর এসব রোগীকে সেবা দেওয়ার জন্য নেই প্রশিক্ষিত অনকোলজিস্ট নার্স। এদিকে মরণঘাতী এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছরই ৪ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় বিশ্ব ক্যানসার দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমি পারি, আমরা পারি’।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর প্রায় ১ কোটি ২ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে, যার মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে প্রায় ৭৮ লাখ। মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ হিসেবেই এ রোগকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্যানসার হতে পারে শরীরের যে কোনো অংশেই। তবে বর্তমান সময়ে এর চিকিৎসা অনেক দূর এগোলেও বাংলাদেশে তা সহজলভ্য নয়। উল্টো একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এ রোগের ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। মূলত ফাস্টফুড, লাল মাংসসহ ভেজাল খাদ্য গ্রহণ; মদ্যপান ও শিল্পকারখানার আধিক্যসহ জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটনার কারণেই এমনটা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি কম থাকায় আক্রান্তরা সঠিক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে অকালেই। তাই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে ও রোগপ্রতিরোধে মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে প্রায় ১২ লাখ ক্যানসার রোগী রয়েছেন। প্রতিবছর এ সংখ্যার সঙ্গে নতুন করে যোগ হচ্ছে আরও আড়াই থেকে তিন লাখ। আবার আক্রান্তদের মধ্যে মারা যাচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ রোগী। সংখ্যাটা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে দুই কোটির বেশি মানুষ। অথচ এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা একেবারেই নাজুক পর্যায়ে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোল্লাহ ওবায়েদুল্লাহ বাকী বলেনÑ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি ১০ লাখ লোকের বিপরীতে একটি করে ক্যানসার সেন্টার থাকতে হবে। সেই হিসাবে ১৬ কোটি লোকের এ দেশে ১৬০টি সেন্টার থাকার কথা। কিন্তু দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ক্যানসার সেন্টার আছে ২০টির মতো, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এসব সেন্টারের মধ্যে ক্যানসার হসপিটাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেন্টার ভালোভাবে চললেও বাকিগুলোর যন্ত্রপাতি প্রায় অকেজো। আবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দু-একটিতে অত্যাধুনিক কিছু যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসাব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। ফলে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে না। কারো ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লেও চিকিৎসা পেতে বিলম্ব হওয়ায় তা অ্যাডভান্স স্টেজে চলে যাচ্ছে। তখন আর চিকিৎসা দিয়েও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।

চিকিৎসক সংকটের কথা জানিয়ে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের এই সাবেক পরিচালক বলেন, দেশের ১৬০টি ক্যানসার সেন্টার থাকলে সেখানে ১০ জন করে চিকিৎসক হলেও তা ১ হাজার ৬০০ জন হতো। অথচ আছে মাত্র দেড়শ চিকিৎসক। এ কারণে একজন রোগীকে দেখার পর তিন থেকে চার মাস পর ফের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে ৫০ ভাগ লোক সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছে। আবার আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে অজ্ঞতা, লজ্জাবোধ বিদ্যমান থাকায় এবং বিলম্বে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ায় অনেককেই চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো সম্ভব হয় না।

ক্যানসারের লক্ষণ : এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, বদহজম, পেট ব্যথা ও আলসার হতে পারে। প্রস্রাবের সঙ্গে অথবা অন্য যে কোনো সময় কারণ ছাড়া রক্তপাত, হঠাৎ গলার স্বরের পরিবর্তন, কফের সঙ্গে রক্ত, খাবার গলাধঃকরণেও সমস্যা হতে পারে। কখনো কখনো শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা ও চাকা চাকা দেখা দেয়। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে তিন ভাগের এক ভাগ রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

অধ্যাপক ডা. মোল্লাহ ওবায়েদুল্লাহ বাকী বলেন, ক্যানসার প্রতিরোধে মানুষকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সেই সঙ্গে শাকসবজি, আঁশ ও শস্যদানা জাতীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ধূমপান, তামাকজাত দ্রব্য, ফাস্টফুড, মদ্যপান, লাল মাংস ও রাসায়নিকযুক্ত খাদ্য থেকে দূরে থাকতে হবে। আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়