ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ: মানুষ ভালো মানুষের সাথে থাকলে ভালো হবে আর খারাপের সাথে থাকলে খারাপ হবে এটাই সাভাবিক। যার কারণে কুরআনে বারবার বলা হয়েছে তোমরা ভালোদের সাথে থাকো, সত্যবাদীদের সাথে থাকো। এই সকল কথা বলার অর্থ হচ্ছে নামাজির সাথে থাকলে নামাজি হওয়া যাবে। সত্যবাদীদের সাথে থাকলে সত্যবাদী হওয়া যাবে। পবিত্র কুরআনের সূরা তাওবার একটি আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে ইমানদাররা! আল্লাহকে ভয়ে করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো। (সূরা: তাওবা, আয়াত : ১১৯)
এই আয়াতের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, সত্যবাদী ও সৎকর্মশীলদের সংস্পর্শ মানুষকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করে, সঠিক পথ দেখায়। ভালো মানুষ হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায়। বর্তমান পরিবেশে পাপাচার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুবই কঠিন। তাই এ পরিবেশে তাকওয়া অবলম্বনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো আল্লাহভীরু লোকদের সোহবত ও সাহচর্যে থাকা। কেননা আল্লাহ তাআলা তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি আল্লাহভীরু লোকদের সাহচর্যে থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহভীরু লোকদের সঙ্গে থাকা, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার মাধ্যমে গুনাহ থেকে সহজেই বেঁচে থাকা যায়। কেননা মানুষ স্বভাবগতভাবেই পরিবেশের প্রভাবে প্রভাবিত হয়। ফলে গুনাহের পরিবেশ বর্জন করে নেক ও সৎ লোকদের পরিবেশে নিজেকে নিয়ে এলে পাপাচার ছেড়ে দেওয়া সহজ হয়। পাপের পরিবেশ ছেড়ে পুণ্যের পরিবেশে আসা এবং বদকারদের ছেড়ে নেককারদের সাহচর্যে আসার এ প্রক্রিয়াকে আত্মশুদ্ধি বলা হয়। আত্মশুদ্ধি হলো আত্মাকে পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র করা। নাপাকির দরুন যেভাবে দেহ অপবিত্র হয়, একইভাবে গুনাহের দরুন অন্তর অপবিত্র হয়। বাহ্যিক বিষয়ে ব্যভিচার, সুদ-ঘুষ, মদ্যপান, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, দুর্নীতি, খুন-খারাবি, গিবত ইত্যাদি পাপ কাজ। একইভাবে আত্মিকভাবেও মানুষের অনেক পাপ-পঙ্কিলতা রয়েছে। অহংকার, আত্মগৌরব, লোকদেখানো কাজ করা, হিংসা, বিদ্বেষ, কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ, অন্যের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা ইত্যাদি অন্তরের পাপ। অন্যদিকে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি বাহ্যিক আমল। আর ইখলাস, তাকওয়া, সবর, শোকর ইত্যাদি হলো আত্মিক বা রুহানি আমল।
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে সত্যবাদী ও খোদাভীরু লোকদের সাথে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন
আপনার মতামত লিখুন :