ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ : ৫৭ ধারার মামলায় ক’জনার শাস্তি হয়েছে সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে একজন মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হলে তার যে ভোগান্তি হয় সেই ভোগান্তির আর কোনো শেষ থাকে না। বিশেষ করে সেই মামলাটা যদি একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কিংবা যে স্বাধীনভাবে গবেষণার কাজ করে তার বিরুদ্ধে হয় তাহলে কষ্টের কোনো শেষ থাকে না। ধরুন আপনি বর্তমান সরকারের কোনো একজন মন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। দূরের কোনো একটি মফস্বল শহরে থাকা মন্ত্রীর একজন ভক্তের মনে হলো এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে কিংবা সেই মন্ত্রীই আপনার উপর ক্ষুব্ধ হলো আর তিনি তার লোকদেরকে দিয়ে প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় আপনার নামে ৫৭ ধারায় মামলা করানো শুরু করলো। এই মামলায় যদি আপনি গ্রেফতার নাও হন তবুও মামলায় হাজিরা দিতে দিতে আপনার অবস্থা কাহিল হয়ে যাবে।
বুধবার দিবাগত রাতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন গবেষক, কলামিস্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি আরো বলেন, ৫৭ ধারা মামলার উদ্দেশ্যই হচ্ছে একজনকে ভোগান্তিতে ফেলা। এতে যে অস্পষ্টতা ছিলো আগে। সেই অস্পষ্টতা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টেও দূর হয়নি। রয়ে গেছে। মোট কথা যেই সকল অস্পষ্ট অপরাধের জন্য ৫৭ ধারায় শাস্তির বিধান করা হয়েছিলো সেইগুলোও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে রয়ে গেছে। এটার সাথে সাংবাদিকদের জন্য আরো যুক্ত হয়েছে ৩২ নম্বর ধারা।
আসিফ নজরুল আরো বলেন, ৩২ নম্বর ধারা মানে হচ্ছে, দুর্নীতি, অনিয়ম, অবিচারের বিরুদ্ধে কোনো রকম সূত্রের মাধ্যমে বা নথির মাধ্যমে পাওয়া কোনো তথ্য নিয়ে আপনি রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবেন না যদি সেই বিষয়ে অনুমোদন না থাকে। আসলে বিষয়টি মূলত এমন যে, যদি কোনো মন্ত্রী কিংবা সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাহলে তাকে গিয়ে বলতে হবে, ভাই আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অভিযোগ আছে, এই বিষয়ে যে নথিপত্র আছে সেগুলো দেন। তিনি যদি আপনাকে নথি-পত্র দেন তাহলেই আপনি তার বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :