অতনু সিংহ : কলকাতার ময়দান চত্বরে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে রাজপথ রঞ্জিত করা ভাষা শহীদদের স্মারক স্থাপনে পুরসভাকে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া ওপার বাংলার বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক ও সংস্কৃতি কর্মীরাও ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দেশটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলা ভাষাভাষিরা।
কলকাতা পুরসভার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, ২০১৬ সালে বিড়লা তারামন্ডলের সামনে ফাইবারের যে ভাষা-শহীদ স্মারক স্থাপন করা হয়েছিল, সেই মূর্তিটিকেই ব্রোঞ্চ দিয়ে পুনর্নিমাণ করে ময়দান চত্বরে স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ২১ ফেব্রুয়ারির আগেই ওই স্মারকটিকে স্থায়ীভাবে স্থাপন করার কথা ছিল। কিন্তু, সম্প্রতি ভারতীয় সেনা এই ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা কলকাতা পুরনিগমকে জানিয়ে দিয়েছে। ভারতীয় সেনার বক্তব্য, ময়দান চত্বরে নতুন করে কোনো মূর্তি স্থাপন করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে বিড়লা তারামন্ডলের সামনে ১৭ লক্ষ ৪৭ হাজার রুপি ব্যয় করে ফাইবার নির্মিত ভাষা-শহীদ স্মারকটিকে বসানো হয়। ওই মূর্তিটি তৈরি করেছেন বিশ্বভারতীর বিশিষ্ট শিল্পী ও ভারতের রাজ্যসভার সাংসদ যোগেন চৌধুরী। এরপর গত বছর তাঁকেই ওই মূর্তিটিকে ব্রোঞ্চ দিয়ে পুনর্নিমাণ করার অনুরোধ করে কলকাতা পুরনিগম। এই মূর্তিটির জন্য প্রায় ৫৮ লক্ষ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারতীয় সেনা এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাবাহিনীর এই বাধা প্রদানের বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া কলকাতায় সেনা নামানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে সেনাবাহিনীর বাধার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীরাও সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ইতিহাস-ঐতিহ্যের ওপর দিল্লির খবরদারির ঘটনা অনেকটা ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের ্ওপর চাপিয়ে দেয়া পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের মতই। আনন্দবাজার
আপনার মতামত লিখুন :