ইমরুল শাহেদ : ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর পর বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া প্রথম ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘আমেরিকার জন্য নতুন মুহূর্ত’ শব্দটি উল্লেখ করে বলেন, ডেমোক্রেটদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার জন্য তিনি তার উন্মুক্ত হাত প্রসারিত করছেন এবং আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্বকে সামনে নিয়ে এসেছেন। ট্রাম্পের এই ভাষণ টেলিভিশনে দেখেছেন দেশটির ৪০ মিলিয়ন বা চার কোটি দর্শক।
এক ঘন্টা ২০ মিনিটের এই ভাষণে তিনি দেশের ভেতরের বিরোধীদের মিত্র হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোকে স্থান দেন। যদিও ট্রাম্প সমর্থকরা আশা করছিলেন, ট্রাম্প যখন গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলছিলেন তখন তিনি আমেরিকানদের ‘এক দল, এক মানুষ ও একটি পরিবার’ বলে উল্লেখ করবেন। ভাষণের শুরুতেই ট্রাম্প বলেছেন, ‘সব সময়ের জন্যই যা সত্যি, গত বছর বিশ্ব তা দেখেছে। বিশ্ব জেনেছে, পৃথিবীর আর কোনও দেশের মানুষ আমেরিকানদের মতো নির্ভীক, সাহসী আর আস্থাশীল নয়। পাহাড় দেখলে সেটায় উঠে পড়তে আমরা দেরি করি না। একটা সীমান্ত দেখলে সেটা পেরিয়ে যেতে ভয় পাই না। যেখানেই আশা, সেখানেই আমরা। সুতরাং আমেরিকা শক্তিশালী, কেননা এর জনগণ শক্তিশালী।’
ট্রাম্প অভিবাসন, সীমান্ত এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট সমন্বিত লড়াইয়ের ডাক দেন। একইসঙ্গে তিনি উত্তর কোরিয়ার নিন্দা জানিয়ে মার্কিনিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তাদের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের দেশের জন্য খুব শিগগিরই হুমকি হয়ে উঠতে পারে। সেটা যাতে ঘটতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছি।’ পক্ষান্তরে তিনি চীন ও রাশিয়াকে মার্কিন মূল্যবোধের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তবে ভাষণে তিনি যখন ভাতা কাটছাঁট করে বৈধ অভিবাসীদের পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার কথা বলছিলেন, তখন কিছু ডেমোক্র্যাট সদস্য অবজ্ঞাসূচক হৈ-চৈ করতে শুরু করেন। তিনি বিতর্কিত গুয়েন্তামা বে কারাগার নিয়ে বলেন, ‘সেটি থাকবে।’ কিন্তু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সেটি বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা তার দায়িত্বের অংশ বলে ঘোষণা করে ট্রাম্প বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে।
বিবিসি জানায়, নব্য উদারবাদী অর্থব্যবস্থা যখন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে ব্যর্থতার নজির স্থাপন করেছে, ঠিক তখনই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নামের সংরক্ষণশীল অর্থনীতির রূপরেখা নিয়ে মার্কিন রাজনীতির মঞ্চে হাজির হন আবাসন ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন অর্থনীতি দ্রুত সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমেরিকান স্বপ্নে বাস করার জন্য এখনকার মতো ভালো সময় আর আসবে না। নির্বাচনের পর থেকে স্টক বাজার উন্নত হতে শুরু করেছে। গত ১৭ বছরের বেকার সমস্যা হ্রাস পাওয়া এবং এক দশক থেকে চলা অর্থনৈতিক মন্দাও পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে।’ ট্রাম্পের হিসেব মতে, দেশটিতে দুই কোটি ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গ্যালপের সমীক্ষা অনুসারে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম বছরে এটা ছিল যে কোনো প্রেসিডেন্টের চাইতে কম। বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :