নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল রোববার দুপুরের পর থেকেই ক্রিকেট অঙ্গনের সবখানেই গুঞ্জন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামের প্রথম টেস্ট দলে সাকিবরে বদলে ডাক পাচ্ছেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। গুঞ্জনটা এক কান দু কান হতে হতে পৌঁছে যায় রাজ্জাকের কানেও। তবে কথাটি যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না তার। হঠাৎ করেই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর ফোন গেলো রাজ্জাকের কাছে। নান্নুর ভাষায়- ‘শোন, তোকে জাতীয় দলে ডাকা হয়েছে।’ কথাটি শুনে একটু হোচট খেলেন রাজ।
তখন রাজ্জাকের কাছে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর পরিচিত কণ্ঠও যেন অচেনা লাগছিল। এই বিষয়ে রাজ্জাক বলেন, বারবার মনে হচ্ছিলো, স্বপ্ন দেখছি না তো। সত্যিই আমাকে জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিতে বলা হয়েছে? পরক্ষণেই ভুল ভাঙ্গলো। যখন নান্নু ভাই বললেন, ‘তোকে আজ রাতেই ক্যাম্পে যোগ দিতে চিটাগং যেতে হবে।’ এরপর পরই শুরু হলো চট্টগ্রাম যাওয়ার প্রস্তুতি।’
রাজধানী থেকে সন্ধ্যা সাতটার ফ্লাইটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন রাজ্জাক। রাজ্জাকের দলে ফেরার খবরটা চারিদিকে বেশ দ্রুতই ছড়িয়ে যায়। প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলে রাজ্জাক জানিয়ে দিলেন, ‘বাংলাদেশ দলে খেলাটা আমার কাছে চিন্তার বাইরের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সত্যি কথা বলতে, জাতীয় দলে খেলার চিন্তা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’
রাজ্জাক এমন কথা বলতেই পারেন। আবার জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার পর এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেই পারেন। কারণ তিনি যে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে! কি আশ্চর্য্য! চার বছর আগে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেছেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এত দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের বাইরে। তারওপর বয়সও হয়ে গেছে। পার হয়েছে ৩৫-এর কোটা।
অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ৩৫ বছর বয়সে তার পক্ষে আর ফেরা সম্ভব নয়। তবে এবার সাকিবের আঙ্গুল ফেটে যাওয়ায় তাকে শেষ মুহূর্তে বিবেচনায় আনা হয়েছে। রোববার বিকেলে জাতীয় দল চট্টগ্রাম পৌছানোর ঘন্টা তিনেক পর রাজ্জাক পৌঁছে যান টিম হোটেল ‘রেডিসন ব্লু‘তে।
এইতো গত সপ্তাহে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে এক ইনিংসে ৬ উইকেট দখল করে নজর কেড়েছেন সবার। তারপরও সমালোচকদের কথা, বয়স হয়েছে। ফিটনেসও কমেছে। তাই রাজ্জাকের পক্ষে আর জাতীয় দলে ফেরা সম্ভব নয়।
তবে রাজ্জাক এ কথা মানতে রাজি নন। ফিটনেস নিয়ে কথা উঠতেই রাজ্জাক বলেন, ‘ভাই আমার বোধ-বুদ্ধি আছে। আত্মমর্যাদাও আছে। আমার বিশ্বাস ও আস্থা, ফিটনেস এখনো ঠিক আছে। ফিটনেস না থাকলে আমি কি আর ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলতে পারি? আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমি যখন বুঝবো ফিটনেস লেভেল কমে গেছে, আমি আর খেলার অবস্থায় নেই- তখন আর খেলবো না। যদি সুযোগ পাই, তাহলে সামর্থ্রে শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করবো।’
প্রধান নির্বাচকের ফোন পেয়ে সন্ধ্যা সাতটার নির্ধারিত ফ্লাইটে টিম ডিনারের আগেই চট্টগ্রামে টিম হোটেল ‘রেডিসন ব্লুতে’ পৌঁছান আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও চট্টগ্রামে রাজ্জাকের হোটেলে পৌঁছানোর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। সুজন বলেন, হ্যাঁ সন্ধ্যার পরের ফ্লাইটে রাজ চট্টগ্রামে এসে টিম হোটেলে যোগ দিয়েছে। (আজ) সোমবার অনুশীলন করবে।’
আপনার মতামত লিখুন :