ডেস্ক রিপোর্ট : সাইবার ক্রাইম বা অনলাইনে হয়রানির শিকার হলে দেশের ৯৩ শতাংশ মেয়ে জানে না এর প্রতিকার কী? আর মোবাইল ফোনে এ্যাপস ব্যবহারের সময় ৯৯ শতাংশ ব্যবহারকারী সব তথ্যে প্রবেশাধিকারের অনুমোদন দিয়ে দেন। এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো চড়া দামে বিক্রি করছে। রবিবার আন্তর্জাতিক তথ্য সুরক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভায় এসব তুলে ধরেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। সভায় সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক কাজী মুস্তাফিজ।
‘প্রাইভেসি টক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম এ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় ছিল প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আগামীটেক ও মিডিয়া মিক্স কমিউনিকেশন্স। সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ হাসান। আলোচনায় অংশ নেন সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজের (সিসিএ) নিয়ন্ত্রক (যুগ্ম-সচিব) আবুল মানসুর মোহাম্মদ সারফ উদ্দিন, সংগঠনের উপদেষ্টা প্রযুক্তিবিদ একেএম নজরুল হায়দার, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম পান্না ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস অব ডিজিটাল সার্ভিসেসের (ইউএসডিএস) কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স ডিরেক্টর শেখ গালিব রহমান প্রমুখ।
আবুল মানসুর মোহাম্মদ সারফ উদ্দিন বলেন, দেশে ৯ কোটি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। সরকার ১২৫ ধরনের ডিজিটাল সেবা দিচ্ছে। কিন্তু ব্যবহারকারীরা তথ্য শেয়ারের ক্ষেত্রে মোটেই সচেতন নন। কোমলমতি মেয়েরা অল্পতেই সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছে। প্রত্যেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্য তথ্য সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে সরকার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। সচেতনতামূলক কর্মসূচিও হচ্ছে, এগুলো আরও বাড়ানো হবে।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে শুধু ডিজিটাল সেবা দেয়া নয়, বরং দেশের ১৬ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত ডিজিটাল যেসব তথ্য সংরক্ষণ করছেন সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আগামী দিনে জাতীয় স্বার্থে তথ্য সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সেবা দেয়ার নামে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তথ্য সুরক্ষা আইন হলে তারা বিতাড়িত হবে। তাই দ্রুত আইন প্রণয়নের উদ্যোগের আহ্বান জানান প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
প্রযুক্তিবিদ একেএম নজরুল হায়দার বলেন, ‘মোবাইল ফোনে এ্যাপস ব্যবহার করার সময় ৯৯ শতাংশ ব্যবহারকারী সব তথ্যে প্রবেশাধিকারের অনুমোদন দিয়ে দেন। আপনার এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো চড়া দামে বিক্রি করছে। এ বিষয়ে সবার সতর্ক হওয়া উচিত।’ ড. এম পান্না বলেন, ‘হ্যাকারগোষ্ঠী বিভিন্ন কাগজে মানুষের বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে অবৈধভাবে কাজে লাগায়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করে আরেকজন ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুললো এবং ওই নামে টাকাও ঋণ করল। পরে সেটি আপনার ঘাড়ে এসে চাপবে। যেসব তথ্য পেলে আপনাকে চেনা যায়, সেগুলো ভালভাবে সুরক্ষিত করতে হবে। এ জন্য দ্রুত আইন প্রণয়ন জরুরী।’ শেখ গালিব রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিদেশে যেসব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো চর্চা করতে হবে।’ জনকণ্ঠ