আসাদুজ্জামান সম্রাট : সরকার বিগত চার বছরে ১৭৪ সংসদ সদস্যকে প্লট এবং পাঁচজনকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়েছে। একই সময়ে সারাদেশে প্লট পেয়েছেন ২৫৪ জন মুক্তিযোদ্ধা।
রোববার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মিলনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ বিষয়ে আরও জানান, বর্তমান সরকারের আমলে রাজধানী, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উল্লিখিত ১৭৯ জন সংসদ সদস্য প্লট ও ফ্ল্যাট পেয়েছেন।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, এই পাঁচ সংস্থার মাধ্যমে বিগত চার বছরে মোট পাঁচ হাজার ৫৯৯টি প্লট ও ৯ হাজার ৯২৮টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার মোট বিক্রয় মূল্য চার হাজার ৮২৩ কোটি ৭৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ণমন্ত্রী জানান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ওই পাঁচ সংস্থা মোট ২৫৪ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে বিভিন্ন আয়তনের প্লট বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাজশাহী, কুষ্টিয়া, সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামে ১ দশমিক ৭৪ কাঠা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ কাঠার প্লট পেয়েছেন মোট ১৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কাঠা থেকে পাঁচ কাঠার প্লট পেয়েছেন ৫২ জন। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একই আকারের প্লট পেয়েছেন ৪৩ জন। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ১৭ জন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চারজন মুক্তিযোদ্ধা প্লট পেয়েছেন।
এদিকে সরকার দল আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের ফিরোজা বেগম চিনুর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গণপূর্ত অধিদফরের ২টি প্রকল্পের ৫২৪টি ফ্ল্যাট চলতি অর্থবছরে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শেরেবাংলা নগরে বহুতল বিশিষ্ট ৪৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিচারপতিদের জন্য তৈরি করা সুউচ্চ আবাসিক ভবনে রয়েছে ৭৬টি ফ্ল্যাট।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে আরও দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৮৮টি ফ্ল্যাট হস্তাস্তর করবে সরকার। এর মধ্যে আজিমপুরে ৪৫৬ ও মতিঝিলে ৫৩২টি ফ্ল্যাট দেয়া হবে। এছাড়াও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ লালমাটিয়ার নিউ কলোনি ও হাউজিং এস্টেটে ২৭৯টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে। যার মধ্যে ৫৪টি নিজস্ব কর্মচারীদের কাছে বিক্রি করা হবে।
একই দলের মো. আবদুল্লাহ তার প্রশ্নে অভিযোগ করেন, ‘শেরেবাংলা নগরের আগারগাঁওয়ে ইএফজি ও এইচ টাইপ কোয়ার্টারে সংসদ সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাস করেন। তারা নিয়মিত পয়ঃ ও পৌরকর পরিশোধ করলেও তাদের কোয়ার্টারের ড্রেন ও সুয়ারেজের লাইনগুলো স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা নিয়মিত পরিষ্কার করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।’
এ ব্যাপারে অবিলম্বে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- তা জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী দাবি করেন, ওই ড্রেন ও সুয়ারেজের লাইনগুলো গণপূর্ত অধিদফর নিয়মিত পরিষ্কার করে। বরং কোয়ার্টারগুলোসহ আশেপাশের এলাকায় বসবাসকারীরা নির্দিষ্ট স্থানের বদলে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় ড্রেন ও সুয়ারেজের লাইনগুলো পরিচ্ছন্ন রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ওই আবর্জনার কারণে ড্রেন ও সুয়ারেজ লাইন প্রায়ই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, গণপূর্তের জনবল স্বল্পতার কারণেও ড্রেন ও সুয়ারেজের লাইন পরিষ্কার রাখা কষ্টসাধ্য হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে মন্ত্রণালয়।
আপনার মতামত লিখুন :