শিরোনাম
◈ তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি ◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৩:৪৩ রাত
আপডেট : ২৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৩:৪৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছাত্রলীগের হামলা: নিজের বহিষ্কার চাইলেন ঢাবি শিক্ষক

ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নিজের বহিষ্কার চেয়েছেন একজন সহযোগী অধ্যাপক। গত মঙ্গলবার উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এই অবস্থান নিয়েছেন তিনি।

বহিষ্কার চাওয়া শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পড়ান।

শুক্রবার ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে বামপন্থী নেতাকর্মীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে এই কথা বলেছেন তানজীম।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন্ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিভিন্ন নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের ‘হামলার’ বিচার দবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট এই এক সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত সরকারি কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে মেয়েদের ‘যৌন নিপীড়নের’ অভিযোগের কোনো সুরাহা না করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনাও করেছেন তানজীম উদ্দিন খান।

এই সহযোগী অধ্যাপক বলেন, ‘আমি বহিরাগত, আমি সরকারের ক্ষমতার বলয়ের বাইরের লোক, তাই শুধু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কেন, আমাকেও তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করুন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীর কড়া সমালোচনা করে এই শিক্ষক বলেন, ‘তার মতো একজন মিথ্যুককে শুধু প্রক্টর থেকে নয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা উচিত। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতা তার নেই।’

সংহতি সমাবেশে বিভিন্ন বামপন্থী দলের শীর্ষ নেতারাও একাত্মতা জানান। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কঠোর সমালোচনা করেন।

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি যে জায়গাতে এসে দাঁড়িয়েছে এটা কেবল উদ্বেগের বিষয় নয়; এটা ক্রোধ এবং ক্ষোভের বিষয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামানের আচরণের সাথে পাকিস্তান আমলে স্বৈরশাসক আইয়ুব-মোনায়েমের চরিত্রের তুলনা করেন সিপিবি সভাপতি। আর ছাত্রলীগের সঙ্গে তুলনা করেন সে সময়ের পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অনুসারী ছাত্র সংগঠন এনএসএফের সঙ্গে।

সেলিম লেন, ‘যে ভিসির নিজের নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে তিনটা গেইটে তালা লাগিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয় তার ভিসির দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক লের সাধারণ সম্পাক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘ছাত্র সমাজকে পেটুয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।’

‘ যারা প্রগতির পথে আছে তাদের আচার-ব্যবহার কখনো নষ্ট হয় না। অন্যদিকে যারা নিজেদের প্রক্রিয়াশীল পথে পরিচালিত করে তাদের আচার-ব্যবহার দিন দিন ধ্বংস হয়ে যায়, যেমনটি হয়েছে বর্তমান ঢাবি প্রশাসন ও ছাত্রলীগের।’

গত ১৫ জুলাই সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়া মেয়েদেরকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হয়রানি করেছেন অভিযোগ এনে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে আন্দোলনে নামে বামপন্থী শিক্ষার্থীরা।

আর ১৭ জানুয়ারি প্রক্টেরের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের পর ২৩ জানুয়ারি তারা উপাচার্য আখতারুজ্জামানের কার্যালয় ঘেরাও করতে যায়। ফটক ভেঙে তারা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। বেলা সোয়া ১২টা থেকে সোয়া তিনটা পর্যন্ত উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

পরে দুই পক্ষে হাতাহাতি এবং সব শেষে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা রড দিয়ে বেদম পিটুনি দেয় বিক্ষোভকারীদের।

এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সোমবার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডেকেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। সেই সঙ্গে বুধবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

অবশ্য এই হামলার পরদিন থেকে সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগও। তারা উপাচার্যের কার্যালয় ভাঙচুর ও তার ওপর হামলায় জড়িত অভিযোগ এনে বামপন্থী বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতার বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

শুক্রবার প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমাবেশে যোগ দেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদও। তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করে, আতঙ্ক সৃষ্টি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে সন্ত্রাসী অবয়ারণ্য তৈরি করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপাচার্য শিক্ষকের ভূমিকা থেকে সরে গিয়ে একজন প্রশাসক, আমলা কিংবা একজন পুলিশ ক্যাডারের ভূমিকায় পরিণত হয়েছেন।’

‘উপাচার্য একজন শিক্ষকের ভূমিকায় নিজেদের অবস্থান ঠিক করলে আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা ভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ইমরান হাবিব রুমনের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অভিনু কিবরিয়া, অধ্যাপক এম এম আকাশ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়