তরিকুল ইসলাম : ইউনিসেফের উপ নির্বাহী পরিচালক জাস্টিন ফোরসাইথ বলেছেন, মিয়ানমারে সহিংসতার পর বাংলাদেশে এসে যে সকল রেহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে তার অর্ধেকের বেশিই শিশু। রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠানোর আগে মিয়ানমারে তাদের নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও হোটেলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনিসেফ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা সফররত সংস্থাটির উপ নির্বাহী পরিচালক।
জাস্টিন ফোরসাইথ বলেন, কুতুপালং শরণার্থী শিবির আমি পরিদর্শন করে দেখেছি তাদের প্রায় ৫৮ শতাংশই শিশু রয়েছে। সহিংসতার অভিজ্ঞতায় যাদের অনেকে এখনও আতঙ্কিত। পরিবারগুলোকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে তাদের অধিকার ও প্রয়োজনগুলোকে কেন্দ্র করে একটি সমঝোতায় পৌছানো অত্যন্ত প্রয়োজন। গত কয়েকদিনেও সীমান্তের ওপারের গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির খবর আমরা শুনেছি। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় তিনি বলেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে বেশ কঠিন। জনাকীর্ণ অবস্থায় পরিষ্কার পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অভাব এসবকিছু শিশুদের জন্য একেকটি ঝুঁকি বহন করে। অসহায় মানুষগুলোকে সাহায্য করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যা কিছু করেছে তার জন্য তারা অনেক প্রশংসার দাবিদার। তাদের নেতৃত্বে অনেক কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও এই মানব বিপর্যয়ের সবচেয়ে খারাপ পরিণতি এড়ানো গেছে।
ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের পাচারকারী এবং অন্যান্য বিপদ থেকে রক্ষায় এবং যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কারণে এখনও যারা আতঙ্কিত তাদের মানসিক সেবা প্রদানে আরোও অনেক কিছু করা উচিত। বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার শিশু যেকোনো ধরনের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদের শিক্ষা ও বিনোদনের স্থানগুলো দ্রুতই সম্প্রসারণ করা হয়েছে, তবে এখনও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এসব ছেলেমেয়েরা যতো দীর্ঘ সময় শেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে তাদের পরিবারের জন্য ঝুঁকি ততোই বাড়বে।
তিনি বলেন, ইউনিসেফ অংশীদারদের সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ কয়েকশ পানিবাহী কূপ খনন, প্রায় ১৬ হাজার টয়লেট স্থাপন, প্রায় ১০ লাখ শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে কলেরার টিকাদানে সহায়তা, অপুষ্টির জন্য ৩ লাখ ৩৫ হাজার শিশুকে পরীক্ষা এবং প্রায় ৮০ হাজার শিশুর জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :