লিহান লিমা: ২০১৭ সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে এক ফোনালাপে নিজের ব্রিটেন সফরে জাঁকজমকপূর্ণ আতিথেয়তার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ডাউনিং স্ট্রিটের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ফোনালাপে ব্রিটেনের গণমাধ্যমে নিজের নেতিবাচক খবর ছাপানোয় মে’র কাছে নালিশ করেছিলেন ট্রাম্প। এছাড়া তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, থেরেসা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনার প্রতিশ্রুতি এবং বিক্ষোভ না হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া না পর্যন্ত ব্রিটেন সফর করবেন না তিনি। মে’র এক উপদেষ্টা এই কথোপকথন শুনে ফেলেন। তিনি বলেন, মে ট্রাম্পকে বলেছিলেন, তিনি যে ভাবেই ট্রাম্পকে স্বাগত জানান না কেন, গণমাধ্যম তা খুব সাধারণভাবেই প্রকাশ করবে, এর মানে এটি নয় যে, তিনি ট্রাম্পকে স্বাগত জানান নি। ওই উপদেষ্টা বলেন, ব্রিটেন ব্রেক্সিট পূর্ববর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়তে চাইলেও ট্রাম্প এবং মে’র সম্পর্ক গড়ে উঠেনি, কারণ ব্যক্তিত্বের দিক দিয়ে দুই জন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর।
মে’র যোগাযোগ উপদেষ্টা কেইতি পেরিওর বলেন, ডাউনিং স্ট্রিটের অনেকেই চান, মে ট্রাম্পের থেকে দুরুত্ব বজায় রেখে চলুক। যদিও মে সম্পর্ক মজবুত করতে হুট করেই ওয়াশিংটন সফর করেছিলেন। মে’র এই সফরে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি তাদের সম্পর্ককে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার এবং সাবেক মার্কিন প্রধানমন্ত্রী রোনাল্ড রিগ্যানের সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, সে আমার ম্যাগি হয়ে উঠবে। হোয়াইট হাউসে মে’র সঙ্গে ওই বৈঠকের পর ট্রাম্প ব্রেক্সিটের মত চমৎকার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য মে’র প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ট্রাম্প ফ্রান্স সফরে যাওয়ায় ট্রাম্প-মে সম্পর্কে শীতলতা সৃষ্টি হয়।
বারাক ওবামার সময়ে হোয়াইটহাউসের ডেপুটি চীফ অব স্টাফের দায়িত্ব পালন করা জিম ম্যাসিনা বলেছিলেন, ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ট্রাম্পের ফ্রান্স যাওয়া প্রেসিডেন্টসুলভ নয়। কারণ ঐতিহ্য বলে, মার্কিনপ্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর হওয়া উচিত যুক্তরাজ্য। তিনি ঐতিহ্য ভেঙ্গেছেন, যদিও ট্রাম্পের কাছ থেকে এটি অপ্রত্যাশিত ছিল না।
এরপরতো সন্ত্রাসী হামলা ও ইরান চুক্তির মত কিছু বিষয়ে ট্রাম্প-মে সরাসরি কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি করেছেন। মে সরাসরি ট্রাম্পকে আক্রমণও করেছেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করেন, এর জের ধরে এখনও মে’র ওপর রেগে আছেন ট্রাম্প।
প্রসঙ্গত, ড্যাভোস সম্মেলনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকের কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এছাড়া ড্যাভোসে ট্রাম্প ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ডেইলি মেইল।