শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৬:২৫ সকাল
আপডেট : ২৫ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৬:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঘুষের টাকার ভাগ পাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাকিরা কারা?

ডেস্ক রিপোর্ট : জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়া লেকহেড গ্রামার স্কুলটি খুলে দিতে নেওয়া ঘুষের টাকার ভাগ পেতেন আরও দুই-একজন। ঘুষ গ্রহণকারী হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিন ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেন ছাড়াও দুই-একজনের বিষয়টি উল্লেখ আছে মামলার বিবরণীতে।

লেকহেড স্কুল খুলে দেওয়া সংক্রান্ত আদেশগুলো যে দফতর থেকে দেওয়া হয়, এই দুই-একজন সেই দফতরের বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার যুগ্মসচিব সালমা জাহানের দফতরে কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকতা আবু আলমের বাসায় তল্লাশিও চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঘুষের টাকা নেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা বাড়তেও পারে অনুসন্ধানে।

মামলার বিবরণীর তথ্য অনুযায়ী, লেকহেড স্কুল দ্রুত খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর চুক্তি করেন নাসিরউদ্দিন ও মোতালেব। এজন্য লেকহেড স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেক হোসেন মতিনের কাছে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই দুই কর্মকর্তা।

চুক্তিমাফিক বনানীর আরএম গ্রুপের কার্যালয় থেকে ঘুষের ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে তিন দফায় ৩ লাখ টাকা নেন নাসিরউদ্দিন। এর মধ্যে ১৮ ডিসেম্বর ৫০ হাজার টাকা, ২৫ ডিসেম্বর আরও ৫০ হাজার টাকা ও ১১ জানুয়ারি ২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এজাহার অনুযায়ী, নগদ ৩ লাখ টাকা থেকে একটি অংশ পান মোতালেবও। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই-একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীও এর ভাগ পেতেন।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের জানান দুর্নীতি নিয়েই আলোচনা করছেন। ৬ নম্বর ভবনের ক্যান্টিনে গত ২১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির বিভিন্ন খবর ছাড়া অন্য কোনও কথা ছিল না তাদের মুখে। একইসঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরেও আতঙ্ক চলছে। তাদের আলোচনার বিষয়, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আর কে থাকতে পারে।

জানা যায়, চুক্তি অনুযায়ী শেষ কিস্তির ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন নাসিরউদ্দিন। এর আগে মোতালেব হোসেন ও খালেক হাসান মতিনকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গুলশান ও বসিলা এলাকা থেকে ধরার পর তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালতের নির্দেশে তারা এখন কারাগারে।

গত ২২ জানুয়ারি নাসিরউদ্দিন ও ২১ জানুয়ারি মোতালেবকে আটক করে ডিবি পুলিশ। দুর্নীতির দায়ে তাদের ধরা পড়ার বিষয়টি সামনে এলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়। ২০ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার যুগ্মসচিবের দফতরে কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকতা আবু আলমের কান্নাকাটি করেন। এ কারণে কয়েকজন কর্মচারীর মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

সন্দেহ করা হচ্ছে, লেকহেড মালিককে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি দেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে মামলার বিবরণীতে, তা হস্তান্তরের সঙ্গে আবু আলমের যোগাযোগ থাকতে পারে। কেননা যে বিভাগ থেকে লেকহেড সম্পর্কিত আদেশ দেওয়া হয়েছে আবু আলম সেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। গত দুই দিন তিনি অফিসে অনুপস্থিত।

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গত বছরের ৫ নভেম্বর ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমন্ডির দুটি শাখা বন্ধের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। প্রতিষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকা এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ, উগ্রবাদী সংগঠন সৃষ্টি, জঙ্গি কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষকতাসহ স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। এর দুই দিন পর ৭ নভেম্বর ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস মেহেদী স্কুলটির দুটি শাখা বন্ধ করে দেন।

গত বছরের ৯ নভেম্বর লেকহেড স্কুলের দুটি শাখা বন্ধের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষে দুটি রিট দায়ের করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলটি খুলে দেওয়ার আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু পরে আবারও তা স্থগিত করে দেন হাইকোর্ট। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় থেকে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট স্কুলটি খুলে দেন। এর পরদিন ১৩ জানুয়ারি থেকেই স্কুলটি খোলা রাখা হয়।

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়