তিনি বলেছেন, দেখা গেছে, তারা উভয়ই যখন ক্ষমতায় থাকে তখন এ বিষয়ে যে কথা বলে, ক্ষমতার বাইরে থাকলে বলে তার উল্টো কথা। এক সময় আওয়ামী লীগ বলত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। সে সময় বিএনপি বলত, একমাত্র শিশু ও পাগল ছাড়া কোনো নিরপেক্ষ মানুষ নেই। ক্ষমতায় থাকা-না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় তাদের কথাবার্তাও ওলটপালট হয়ে গেছে। এখন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচন হতে হবে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনেই। আর বিএনপি বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচন করা চলবে না, নির্বাচন করতে হবে নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। বিএনপি যেমন তার প্রস্তাবিত সহায়ক সরকারের কোনো রূপরেখা প্রকাশ করেনি, প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচনকালীন সরকারের বিস্তৃত ও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা এখনো দেননি। তথাপি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ও সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে অন্তত একটি কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে বলে বলার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা মেনে নিয়েছেন যে, নির্বাচনের সময় আগের নিয়মিত সরকার আর থাকবে না, নতুন সরকার গঠিত হবে। আগের সরকারই যদি বহাল থাকে তা হলে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। অর্থাৎ নিয়মিত সরকার ও নির্বাচনকালীন সরকার যদি একই ব্যক্তিদের দ্বারাও গঠিত হয়, তথাপি তারা দুটি ভিন্ন সরকার। এই ভিন্নতা হলো তাদের নির্বাহী কর্তৃত্বের এখতিয়ারের মাত্রায় ভিন্নতার ক্ষেত্রে। দেখা যাক, এ বিষয়ে সংবিধানে কী আছে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি হলো, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন সম্পর্কে। সরকারিভাবে এর আগে এ বিষয়টিকে ঠিক এভাবে কখনো সামনে আনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালের জন্য নিয়মিত সরকার থেকে ভিন্নতর একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করেছেন। ভিন্নতর সরকার কেন বলছি? বলছি এ কারণে যে, নিয়মিত সরকার থেকে ভিন্নতর না হলে একটি নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন নিশ্চয়ই আসত না। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে গঠন শব্দটির ব্যবহার নিশ্চয়ই খামোখা করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :