আশিস গুপ্ত, নয়াদিল্লি : আগামী দিনগুলিতে ভারতে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে মহাজোট গঠনের প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেলো সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। ওই খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আবার সংখ্যাগরিষ্টতা প্রমান হলো দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট গোষ্ঠীর। দলের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির আনা খসড়া প্রস্তাব ৫৫–৩১ ব্যবধানে হেরে গেল।রবিবার কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ভোটাভুটিতে হেরে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন হতাশ সীতারাম ইয়েচুরি।
তাঁর ইস্তফা ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম। দলের তিনদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের শেষদিনে, বিজেপি বিরোধিতার পথ কী হবে তা নিয়ে ভোটাভুটি হয় কেন্দ্রীয় কমিটিতে। যদিও, সীতারাম ইয়েচুরি এবং প্রকাশ কারাট দু’জনেই একমত যে — এই মূহুর্তে বিজেপিই প্রধান প্রতিপক্ষ। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’কে হারানোই প্রধান লক্ষ্য। তাঁদের মতভেদ ছিল কোন পদ্ধতিতে দল এগোবে।সীতারামের প্রস্তাব, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে এগোতে হবে।
যদিও সরাসরি কংগ্রেসের নাম করা হয়নি সীতারামের প্রস্তাবে। ‘সমঝোতা’ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। অপরদিকে ঢাক ঢাক গুরগুর না করেই প্রকাশ কারাট এবং এস রামচন্দ্রন পিল্লাইয়ের খসড়ায় বলা হয়, ‘কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট বা সমঝোতায় না গিয়েই’ বিজেপিকে হারাতে হবে। সেক্ষেত্রে কারাটদের বক্তব্য, বিজেপি’র সঙ্গে নেই কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে এমন প্রভাবশালী আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করা যায়। নির্দিষ্ট করে তামিলনাড়ুর কথা বলা হয়েছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে ডিএমকে জোটে রয়েছে। কারাট গোষ্ঠী বলছে, ডিএমকের সঙ্গে জোট করা যেতে পারে। যে সমস্ত রাজ্যে কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রত্যক্ষ লড়াই করছে, সেখানে অল্প আসনে লড়ুক সিপিএম। সেক্ষেত্রে বিজেপি’কে হারানোর আবেদন করবে দল।উল্লেখ্য ,২০১৬'তে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল সিপিএম। সেসময় প্রকাশ কারাট'রা প্রাথমিক পর্যায়ে ওই জোটের বিরোধিতা করলেও পরে পার্টির পশ্চিমবঙ্গ শাখার চাপে তা মেনে নেন। ভোটের ফলাফলে সিপিএম মুখ থুবড়ে পরে। তাই এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিরোধীরা অনেক বেশি জোরের সঙ্গে নিজেদের বক্তব্য রাখেন। সীতারামের প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ায় কারাট এবং পিল্লাইয়ের বিকল্প খসড়া নিয়ে আগামী এপ্রিলে আলোচনা ও তা চূড়ান্ত হবে হায়দ্রাবাদে দলের মহা সম্মেলনে।
আপনার মতামত লিখুন :