লিহান লিমা: জানুয়ারিতে বাজেট ঘোষণার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ তিউনেশিয়ায় ২০১১ সালের সেই সাড়া জাগানো আরব বসন্ত যেন আবারো ফিরে আসে। বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দুর্নীতি, প্রশাসনিক অনিয়ম ও ভবিষ্যতের আশাহীনতা তিউনেশিয়ার জনগণকে আবারো রাস্তায় নামিয়ে এনেছে।
শুরুটা হয়েছিল দেশটির ছোট্ট শহর বাল্টায় কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে এটি পুরো দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় আফ্রিকার কয়েকজন নিহত এবং অনেকে আহত হয়, সহিংসতা, চুরি ও লুটতরাজ চালানোর অভিযোগে মোট ৮০৩ জনকে আটক করা হয়। দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভের পর তিউনিসিয়া সরকার দরিদ্র পরিবারগুলোকে ৭কোটি ৩০লক্ষ ডলার অতিরিক্ত সহায়তা দানের কথা ঘোষণা করে। স্বাস্থ্য ও আবাসন খাতেও বরাদ্দ বাড়ানোর বার্তা দিলেন প্রেসিডেন্ট বেজি সাইদ ইসেবসি।
জেসমিন বিপ্লবের হাওয়ায় পতন ঘটেছিল দীর্ঘ দিনের একনায়ক জিনি আল আবিদিন বেন আলির শাসনের। প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গণতন্ত্র। ৭ বছর পর আবারো নাগরিক অধিকারের নতুন দাবিতে রাস্তায় তিউনেশিয়ানরা। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, টলটলায়মান অর্থনীতি, অস্থিতিশীলতা ও মুদ্রাস্ফীতি, স্তরে স্তরে বিদ্যমান প্রশাসনিক দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী হামলার ফলে পর্যটন শিল্পে ধ্বস জনগণের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বেন আলি এবং তার উত্তরসূরী হাবিব বোরগালিবার অধিক সন্তান নীতির কারণে তিউনিসিয়ার জনসংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯ লাখ তরুণ এখনো চাকরি খুঁজছেন, এদের মধ্যে অর্ধেকই ¯œাতক। ২০১১ সালের বিপ্লবের পর ৮০ হাজার সাময়িক চাকরি দেয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত তা স্থায়ী করা হয় নি এবং কম বেতনে কোন রকম নিরাপত্তা ছাড়াই চাকরি করছেন তারা, নেই ছুটি কিংবা ভাতা। বাল্টা শহরে ১০ জন শিক্ষিত তরুণের মধ্যে মাত্র ১ জন আয় করতে পারেন। বেশিরভাগ তরুণ চরমপন্থার দিকে ঝুঁকছে এবং অন্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে। তাই সরকারের প্রতিশ্রুতিতে বিক্ষোভে কিছুটা ভাটা পড়লেও তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান।
আপনার মতামত লিখুন :