স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল: আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই বাংলাদেশপ্রেমী ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের নাগরিকত্বের বিষয়টির সুরাহা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ৫৭ বছর আগে অক্সফোর্ড মিশনের একজন কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের প্রতি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অনেকেই প্রাণ ভয়ে পালিয়ে গেলেও লুসি হল্ট এদেশেই রয়ে গেছেন।
যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। দেশ স্বাধীনের পরেও তিনি বাংলাদে ছেড়ে যাননি। তিনি ভালোবেসেছেন এখানকার মানুষকে। তাইতো মৃত্যুর পরেও যেন তাকে বরিশালের মাটিতে সমাধিস্থ করা হয় সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লুসি। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, একজন জেলা প্রশাসক হিসেবে তার অনুভূতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধে আহতদের যে সেবা করেছেন সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। এই প্রেক্ষাপটে লুসি হল্ট যাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পান, দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা লাভ করেন সে চেষ্টা করা হচ্ছে। অল্প কিছু দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের আইনগত সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে ব্রিটেন একটি। একটি আবেদন এরইমধ্যে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। অচিরেই সার্বিক বিষয় উল্লেখ করে সরকারের কাছে পত্র লেখা হবে, যাতে বিষয়টির দ্রুত নিস্পত্তি হয়। সেমতে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই বাংলাদেশপ্রেমী ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্বের বিষয়টির সুরাহা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্মগ্রহণ করা লুসির বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। ১৯৪৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা লুসির বড় বোন রুট অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন পুত্র নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন। লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন এবং যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। কর্মজীবন থেকে ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়া লুসি এখনও দুঃস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করছেন। ৫৭ বছর ধরে এদেশে থেকে বরিশাল ছাড়াও যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে কাজ করেছেন তিনি। জীবনের দীর্ঘ সময় লুসি বরিশালে কাটিয়েছেন। তাই চিরনিদ্রায়ও শায়িত হতে চান বরিশালের মাটিতেই।
আপনার মতামত লিখুন :