শিরোনাম
◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৪:৩৩ সকাল
আপডেট : ২১ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৪:৩৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিয়ম মাফিক বৈঠক করছে না সংসদীয় কমিটিগুলো

সজিব খান: মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিগুলোর মাসে অন্তত একটি করে বৈঠক করার কথা রয়েছে। তবে হাতে গোনা কয়েকটি কমিটি ছাড়া বেশিরভাগই নিয়ম অনুযায়ী বৈঠক করতে পারছে না। নিয়ম অনুযায়ী বছরে ১২টি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও বিদায়ী বছরে কোনও কোনও কমিটি ৩/৪টির বেশি বৈঠক করতে পারেনি।একমাত্র নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি নিয়মে চলছে।বাকি কমিটিগুলোর কোনোটিই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি দশম সংসদ যাত্রা শুরু করে। এরপর সংসদীয় কমিটিগুলো গঠন করা হয়। সংসদের কার্যপ্রণালীর ২৪ বিধি অনুাযায়ী মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিমাসে অন্তত একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে। তবে প্রতিমাসে বৈঠক অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি চার বছরে সর্বোচ্চ ৭৪টি বৈঠক করেছে।

বৈঠক অনিয়মিত হওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি কম থাকা ও মন্ত্রীকে দায়ী করেছেন। তাদের মতে, মন্ত্রী ঠিকমতো সময় না দেওয়ায় নিয়মিত বৈঠক সম্ভব হয়নি।

৫০টি সংসদীয় কমিটির মধ্যে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি হচ্ছে ৩৯টি। এর মধ্যে মাত্র নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি রুটিন মেনে চলতে পেরেছে। দেখা যাচ্ছে, ১৫টি কমিটি রয়েছে, যারা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক সংখ্যক বৈঠকও করতে পারেনি। বিধি অনুযায়ী বিদায়ী বছরে ১২টি বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও তিনটির বেশি করতে পারেনি এমন সংসদীয় কমিটিও রয়েছে।

২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিগুলোর কার্যক্রম পর্যলোচনা করে করে দেখা গেছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ৫০টি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা ৪২টি, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক ৪০টি, মহিলা ও শিশু ৪০টি, রেলপথ ৪০টি, পরিবেশ ও বন ৩৭টি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ৩৯টি, পরিকল্পনা ৩৬টি, ভূমি ৩৪টি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন ৩৩টি, যুব ও ক্রীড়া ৩৩টি, সমাজকল্যাণ ৩১টি, পানিসম্পদ ৩২টি, প্রতিরক্ষা ২৮টি, ধর্ম ৩১টি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ২৯টি, কৃষি ২৭টি, সংস্কৃতি ২৭টি, জনপ্রশাসন ২৬টি, বস্ত্র ও পাট ২৬টি, শিক্ষা ২৫টি, সড়ক পরিবহন ২৫টি, বাণিজ্য ২৪টি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ২৪টি, তথ্য ২৩টি, অর্থ ২২টি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ২২টি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত ২২টি, খাদ্য ২১টি প্রবাসী কল্যাণ ২১টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ ২০টি, শিল্প ২০টি, স্থানীয় সরকার ১৯টি, স্বাস্থ্য ১৯টি, মুক্তিযুদ্ধ ১৯টি, স্বরাষ্ট্র ১৮টি, পররাষ্ট্র ১৬টি শ্রম ও কর্মসংস্থান ১৬টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিয়ষক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ১৬টি বৈঠক করেছে।

এদিকে, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটিগুলোর বাইরে যে ১১টি কমিটি রয়েছে, সেখানে প্রতিমাসে বৈঠকের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, প্রত্যেক অধিবেশনের আগে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এই কমিটিগুলোর বৈঠক পর্যালোচনা করে দেখা গেছে— সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ৪ বছরে ৭৬টি বৈঠক করেছে। সংখ্যার দিক থেকে অন্যান্য সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে এই কমিটি। এছাড়া, সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ৩৬টি, কার্যউপদেষ্টা কমিটির ১৯টি, সংসদ কমিটি ১১টি, বেসরকারি সদস্যদের বিল ও সিদ্ধান্ত প্রস্তাব কমিটি চারটি, পিটিশন দুটি, লাইব্রেরি সাতটি, সরকারি হিসাব ৭৪টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান ৩১টি, অনুমিত হিসাব ১৭টি ও সরকারি প্রতিশ্রুতি ৩৬টি বৈঠক করেছে।বিশেষ অধিকার ও কার্যপ্রণালীবিধি সম্পর্কিত কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি।

সাড়ে তিন মাসের বেশ সময় পার হলেও বৈঠকে বসেনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। গেল বছরে এই কমিটির মাত্র ৪টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক অনুষ্ঠানের সংখ্যার হিসাবে পেছনের দিকে থাকা এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক জানান, তার মন্ত্রণালয়ের পরিধি কম থাকার কারণে বৈঠকও কম হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বৈঠকের চেষ্টা করি। তবে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাত্র একটি দফতর রয়েছে, এজন্য কাজের পরিধি কম। যার কারণে বেশি বৈঠকের প্রয়োজন পড়ে না।

নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠানে সক্ষম হওয়া নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) বলেন, ‘কার্যপ্রণালী বিধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা প্রতিমাসে বৈঠক করার চেষ্টা করেছি। তবে এতেও আমি সন্তুষ্ট নই। আমি মনে করি, আরও বৈঠক করতে পারলে ভালো হতো।’

অন্য কমিটিগুলোর বৈঠক পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে এই আইন প্রণেতা বলেন, ‘অন্যরা কেন পারেননি সেটা তো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে কার্যপ্রণালী বিধিতে মাসে কমপক্ষে একটি করে বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা আছে। কেউ যদি না করে, তাহলে স্পিকার আদেশ দিয়ে বৈঠক করাতে পারেন।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়