ডেস্ক রিপোর্ট : পদ্মা সেতুর ৩ হাজার টন ওজনের দ্বিতীয় স্প্যানটি মাওয়া থেকে জাজিরার ৩৮-৩৯ নম্বর পিলারের কাছে নেওয়া হচ্ছে। ২৪ জানুয়ারি এটি পিলারের ওপর বসানোর কথা রয়েছে। এটি পিলারের ওপর বসলে একসঙ্গে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য পদ্মা সেতু দেখা যাবে। পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যানটি সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সক্ষমতা যাচাই শেষে রং মেখে প্রস্তুত হয়েছে। পদ্মা নদীর মাওয়া পাড় থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ৩ হাজার টন ওজনের এ স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে ৩৮-৩৯ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিসম্পন্ন ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ওজন বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্রেন। এই ক্রেনের সাহায্যে স্প্যানটি আজ সকালে মাওয়া থেকে জাজিরার দিকে রওনা হচ্ছে।
এই ক্রেনটি নদীতে চলার জন্য ৫ মিটার গভীরতা প্রয়োজন হলেও সাধারণত পদ্মায় পানির গভীরতা থাকে ৩ মিটার। তাই এখানে তিনটি ড্রেজারের সাহায্যে পলি অপসারণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচলের বিষয়টিও মাথায় রাখছে কর্তৃপক্ষ। এই ক্রেনটি জাজিরা যেতে দুই দিন লাগবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ৩ হাজার টন ওজনের দ্বিতীয় এই স্প্যানটি মাওয়ার ওয়ার্কশপ ইয়ার্ড থেকে গত সপ্তাহে পদ্মায় নামানোর পর ওয়ার্কশপ জেটিসংলগ্ন স্টকইয়ার্ডে ক্রেনে ধারণ করা হয়েছে। ৩ হাজার ৬০০ টন ক্ষমতার এই ক্রেনের সাহায্যে পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টে সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের কাছে নেওয়া হবে স্প্যানটি। ২৪ জানুয়ারি এটি পিলারের ওপর বসবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এ উদ্দেশ্যে জাজিরার ৩৮-৩৯ নম্বর পিলারের ওপর সিমেন্টের মিশ্রণ গ্যারোটিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম স্প্যান বসানোর সময় গ্যারোটিং প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর ক্ষেত্রেই এই গ্যারোটিং দিতে হয়েছে। সিমেন্ট, পানি ও কেমিক্যালের মিশ্রণ যথাযথ হওয়ার পরই গ্যারোটিং সম্পন্ন হয়েছে। দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা গতকাল জানান, এখন দ্বিতীয় স্প্যান বসতে আর কোনো সমস্যা নেই। তাই দ্বিতীয় স্প্যান (৭বি) পেন্টিং শপ থেকে বের করে মাওয়া ঘাটে রাখা হয় এবং আজ সকালে তা জাজিরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দুই দিন পর ৩৮-৩৯ নম্বর পিলারের পাশে পৌঁছবে এবং এই ক্রেনের সাহায্যে পিলারের ওপর বসানো হবে। এ নিয়ে এখন প্রকল্প এলাকায় বিশেষ প্রস্তুতি চলছে। পদ্মাপাড়ের মানুষের মাঝে বইছে উত্সবের আমেজ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুতে মূল পিলার হিসেবে থাকবে ৪২টি। এ ছাড়া দুই পাড়ে আরও ১২টি করে ২৪টি পিলার থাকবে। অর্থাৎ দেশের বৃহৎ এই সেতুতে সর্বমোট পিলার বসবে ৬৬টি। মূল ৪২টি পিলারের প্রতিটিতে ৬টি করে পাইল বসবে, এতে মোট পাইল বসবে ২৫২টি। এর মধ্যে ১১৭টি পাইল ইতিমধ্যে পদ্মাবক্ষে স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বা সুপারস্ট্র্যাকচার বসানো হবে। প্রতিটি সুপারস্ট্রাকচার বা স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার এবং এর ওজন ৩ হাজার মেট্রিক টন। ২১টি স্প্যান ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশে এসেছে ১৪টি স্প্যান। এগুলোকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় কুমারভোগে পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এখানেই এগুলোকে ফিটিংসসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেতুর ওপর বসানো হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন