ইমতিয়াজ মেহেদী হাসান : ছোটবেলা থেকেই গানপাগল তিনি। মাঠ-ঘাট সর্বত্রই গুনগুনিয়ে গাইতেন। এমনও হয়েছে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে তখন তিনি উঠে গিয়ে বাইরে একা গলা ছেড়ে গাইছেন। স্কুলের মাঠ কিংবা খোলা জায়াগাতেও চলতো তার সঙ্গীত সাধনা। কে জানতো সেদিনের সেই ছেলেটি আজ জনপ্রিয় সংগীতযোদ্ধাদের একজন হবেন। হ্যাঁ, আমি সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও কন্ঠশিল্পী শেখ মিলনের কথা বলছি।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শীলন সাংস্কৃতিক সংগঠণ থেকে সেদিন যে ছেলেটি তার মিউজিক্যাল জার্নি শুরু করেছিল, শত ঝড় ঝাপ্টাতেও সে তার গতিপথ বদলায়নি। বরং খারাপ সময়ে আরও অদম্য স্পৃহা নিয়ে পথ চলেছে। সান্তনা দিয়ে নিজেকে নিজে বলেছে, মিলন তোকে দিয়েই হবে। একদম চিন্তা করিস না। অন্ধকার বেশি সময় থাকে না। আলো আসবেই। দেখে নিস, ঠিকই আসবে।
আজ সঙ্গীতজগতে মিলন এক সুপরিচিত নাম। গানের এই বিনয়ী মানুষটি সুরের পথ ধরে যেতে চান বহু দূর। তাইতো রাতদিন এক করে আপন মনে কাজ করে চলেছেন রাজধানীর মগবাজারস্থ নিজ স্টুডিও ‘গান পাগল’ এ।
দেশের স্বনামধন্য এবং এ সময়ের অধিকাংশ তারকা শিল্পীদের নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। সে তালিকায় ফাতেমা তুজ্জোহরা, ফেরদৌস আরা, ইয়াসমিন মুস্তারি, ন্যান্সী,কণা, ঐশী, বেলাল খান, কাজী শুভ, রাজীব, মুহিন, রাফাত, লিজা, স্বরলিপিদের মত শিল্পীরা রয়েছেন।
বর্তমানে মিলন ‘বি মিউজিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের একশ’ গানের একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন । এ প্রসঙ্গে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ইতোমধ্যে প্রজেক্টের অনেকগুলো গানের কাজ শেষ হয়েছে। বাকীগুলো নিয়ে প্রতিদিন কাজ করছি। দর্শক-শ্রোতাদের সর্বোচ্চ ভালোটা দেয়ার প্রয়াসে একটু সময়ে নিয়েই গানগুলোর পেছনে সময় দিচ্ছি। আশারাখি ভালোটাই দিতে পারবো।
বি মিউজিক থেকে শেখ মিলনের সুর, সঙ্গীত এবং নিজের গাওয়া ‘পরী’ শিরোনামের চমৎকার মিউজিক ভিডিওটি এখন রয়েছে মুক্তির মিছিলে। সামনে যে কোন দিন এটি ‘বি মিউজিক’ এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হবে।
২০০১ সালে মেধাবী এই সংগীতজনের ‘বন্ধু তুমি’ নামে একটি একক অ্যালবাম বের হয়। এরপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে তিনি ভালো কাজ উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। জানালেন, জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তার এই কর্মধারা অব্যাহত থাকবে। চেষ্টা করবেন সর্বোচ্চ ভালো কাজটা উপহার দেয়ার। আর সেটি যে কোন কিছুর বিনিময়েই।
বর্তমান অডিও বাজার নিয়েও কথা বললেন শেখ মিলন। তিনি বলেন, অডিও বাজার মন্দ এটা আমি মনে করিনা। কারণ এখন ব্যবসার ধরণ বদলেছে। গান তৈরিতে বেড়েছে বাজেট। যদি বাজার মন্দাই হতো তাহলে প্রযোজকেরা গানপ্রতি দুই-তিন লাখ টাকা খরচ করতেন না। পাশাপাশি আছে মিউজিক ভিডিও, সেখানও অনেক টাকার ব্যাপার। তাছাড়া একটা সুখবরও আছে, আমাদের শ্রোতা বেড়েছে। কৃষক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ এখন কাজের পাশাপাশি মোবাইলে গান শুনছেন। আর এটি সম্ভব হয়েছে অনলাইনের কল্যাণেই। আমার ধারণা, সামনে ইন্ডাস্ট্রিতে আরো ভালো সময় আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :