ফারমিনা তাসলিম : শারীরিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, বেতন বৈষম্যর ফলে গত এক সপ্তাহে সৌদি আরব থেকে ৩২৪ জন নারী শ্রমিকরা দেশে ফিরেছেন। কারো হাত ভাঙ্গা, কারো মাথায় আঘাত। বৈদ্যুতিক শকও দেয়া হয়েছে। শরীরে নির্যাতনের দগদগে ক্ষতের চেয়ে মনের ক্ষত যেন আরও বড়।
সংসারে খানিকটা স্বস্তি ফেরাতে স্বামী-সন্তান-স্বজন রেখেই বিদেশযাত্রা করেছিল। অভাবের আঁধার কাটাতে সৌদিতে গেলেও, আরো অন্ধকার নিয়ে তাদেরকে ফিরতে হয়েছে।
বিনা খরচে যাওয়ার কথা থাকলেও অনেকের কাছ থেকে দালালরা ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। নির্যাতনের মুখে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধে তারা আরো টাকা চায়। পরে সরকারি সহায়তায় তারা ফিরেছেন।
নারী গৃহকর্মীদের অভিযোগ, সৌদিতে অনেক নারীকেই বিক্রি করে দিত বাড়ির মালিকের কাছে। তাই বেতন চাইলেই চলতো ভয়ংকর নির্যাতন। যৌন হয়রানির অভিযোগই সবচেয়ে বেশি।
এমন এক গাজীপুরের নির্যাতিতা গৃহকর্মী। সে তানিয়া নামের এক নারী গৃহকর্মীকে খুনের ঘটনা দেখে ফেলায়, তার ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। পরে পালিয়ে গেলেও দালালরা ধরে আবার বিক্রি করে দেয়।
এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সরকারের জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। সেখানেও আছে ভুক্তভোগীরা।
বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ বলছে, নারী কর্মীরা বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার হয়ে দূতাবাসের সেইফহোমে ছিল। নির্যাতন বন্ধে আগামি মার্চে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তারা।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ জানিয়েছেন, মার্চে সৌদি আরবের সরকারের সঙ্গে নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে।
বর্তমানে এক লাখ একুশ হাজার নারী শ্রমিক সৌদি আরবে আছেন। এরমধ্যে ২০১৭ সালে সবেচেয়ে বেশি ৮৩ হাজার কর্মী গেছে। তবে নির্যাতনের শিকার হয়ে কতজন ফিরেছেন ? সেই হিসেব নেই কারো কাছে।
সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট টিভি
আপনার মতামত লিখুন :