শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮, ০১:৫৯ রাত
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮, ০১:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তাকওয়ার প্রয়োজনীয়তা

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ: আমরা তাকওয়ার কথা শুনি। কিন্তু তাকওয়া আসলে কি? তাকওয়া হচ্ছে মানুষের মনে যে আল্লাহর ভয় আছে সেটাই হচ্ছে তাকওয়া। আল্লাহপাক কুরআনে ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-১০২)

পবিত্র কুরআনে মাহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, এ হচ্ছে আসল ব্যাপার (এটি বুঝে নাও), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ নির্ধারিত রীতিনীতির প্রতি সম্মান দেখায়, তার সে কাজ তার অন্তরের আল্লাহ ভীতির পরিচায়ক (সূরা-আল হজ্জ, আয়াত-৩২) পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেছেন, তাহলে তুমি কি মনে করো, যে ব্যক্তি আল্লাহ ভীতি ও তার সন্তুষ্টি অর্জনের ওপর নিজের ইমারতের ভীত্তি স্থাপন করলো সে ভাল, না যে ব্যক্তি তার ইমারতের ভিত উঠালো একটি পতাকার স্থিতিহীন ফাঁপা প্রাণের ওপর এবং তা তাকে নিয়ে সোজা জাহান্নামের আগুনে গিয়ে পড়লো? এ ধরনের জালেমদের আল্লাহ কখনো সোজা পথ দেখান না। (সূরা-আত তাওবা, আয়াত-১০৯)

এখানে কুরআনের মূল শব্দ হচ্ছে, জুরুফ। আরবি ভাষায় সাগর বা নদীর এমন কিনারাকে জুরুফ বলা হয় স্রোতের টানে যার তলা থেকে মাটি সরে গেছে এবং ওপরের অংশ কোন বুনিয়াদ ও নির্ভর ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে। যারা আল্লাহকে ভয় না করা এবং তার সন্তুষ্টির পরোয়া না করার ওপর নিজেদের কার্যক্রমের ভিত গড়ে তোলে, তাদের জীবন গঠনকে এখানে এমন একটি ইমারতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। যা এমনি ধরনের একটি অন্তসরাশূন্য অস্থিতিশীল সাগর কিনারে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি একটি নজীরবিহীন উপমা। এর থেকে সুন্দরভাবে এ অবস্থার আর কোনো চিত্র, আকা সম্ভব নয়। এর সমগ্র অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করতে হলে বুঝে নিতে হবে যে, দুনিয়ার জীবনের যে উপরি ভাগের ওপর মুমিন, মুনাফিক কাফের, সৎকর্মশীল, দূষ্কৃতকারী তথা সমস্ত মানুষ কাজ করে, তা মাটির উপরিভাগের স্তরের মতো যার ওপর দুনিয়ার সমস্ত ইমারত নির্মাণ করা হয়ে থাকে। এ স্তরের মধ্যে কোনো স্থায়িত্ব ও স্থিতিশীলতা নেই। বরং এর নীচে নিরেট জমি বিদ্যমান থাকার ওপরই এর স্থিতিশীলতা নির্ভর করে।

যে স্তরের নীচের মাটির কোন জিনিসের যেমন নদীর পানির তোড়ে ভেসে গেছে তার ওপর যদি কোনো মানুষ (যে মাটির প্রকৃত অবস্থা জানে না ) বাহ্যিক অবস্থায় প্রতারিত হয়ে নিজের গৃহ নির্মাণ করে তাহলে তা তার গৃহসহ ধ্বসে পড়বে এবং সে কেবল নিজেই ধ্বংস হবে না। বরং এ অস্থিতিশীল ভিতের ওপর নির্ভর করে নিজের জীবনের যা কিছু পুঁজিপাট্রা সে সংশ্লিষ্ট গৃহের মধ্যে জমা করেছিল সবই এ সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে।

দুনিয়ার জীবনের এ বাহ্যিক স্তরটরও এ উপমাটির সাথে হুবহু মিল রয়েছে। এ স্তরটির ওপরই আমরা সবাই আমাদের জীবনের যাবতীয় কার্যক্রমের ইমারত নির্মাণ করি। অথচ এর নিজের কোনো স্থিতি ও স্থায়িত্ব নেই। বরং আল্লাহর ভয় তার সামনে জবাবদিহির অনুভুতি এবং তার ইচ্ছা ও মর্জি মতো চলার শক্ত ও নিরেট পাথর খণ্ড তার নীচে বসানো থাকে, এটার ওপর তার মজবুতি ও স্থিতিশীলতা নির্ভর করে। যে অজ্ঞ ও অপরিণামদর্শী মানুষ নিছক দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিকের ওপর ভরসা করে আল্লাহর ভয়ে ভীত না হয়ে এবং তার সন্তোষ লাভের পরোয়া না করে দুনিয়ায় কাজ করে যায় সে আসলে নিজের জীবন গঠনের বুনিয়াদ নীচে থেকেই অন্তসার শুণ্য করে দেয়। তার শেষ পরিণতি এ ছাড়া আর কিছুই নয়, যে ভিত্তিহীন যে উপরি স্তরের ওপর সে তার সারা জীবনের সঞ্চয় জমা করেছে। একদিকে অকস্মাৎ তা ধ্বসে পড়বে এবং তাকে তার জীবনের সমস্ত সম্পদসহ ধ্বংস ও বরবাদ করে দেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়