মতিনুজ্জামান মিটু: রপ্তানির প্রচুর সুযোগ থাকলেও প্রকিয়াজাতকরণ এবং ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতি বছর উৎপাদিত জাতীয় ফল কাঁঠালের প্রায় ৪০ শতাংশ পচে নষ্ট হয়। এদিকে বাজার ব্যবস্থার দূর্বলতায় সঠিক দাম না পাওয়ায় দেশে কমছে কাঁঠাল চাষের জমি, কমছে কাঁঠাল গাছ। দেশে কাঁঠালের এই বেহাল দশায় ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের পুরো বাজার দখল করেছে ভারতীয় কাঁঠাল।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী রোববার (১৪ জানুয়ারি) তৃতীয় জাতীয় সবজি মেলার উদ্বোধনী দিনের সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, মধ্যপ্রাচ্য দখল করেছে ভারতীয় কাঁঠাল। ফ্রেশ ফুড হিসেবে ছাড়াও ভেজিটেবল মিট বানিয়ে খাওয়া এবং রপ্তানী করা যায় কাঁঠাল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালের জমি ক্রমান্বয়ে কমে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ২৯৫ হেক্টর। এ সময় দেশে কাঁঠাল উৎপন্ন হয় ১৭লাখ ৫১ হাজার ৫৪৯ মেট্রিক টন। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৭৯হাজার ১২ হেক্টর জমিতে ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ২০৯ মেট্রিক টন এবং ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৭৯ হাজার ৯৪৭ হেক্টরে ১৬লাখ ৬৬ হাজার ৮৬৯ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়।
প্রতিনিয়ত নানা কারণে নিধন হলেও নতুন করে কাঁঠাল গাছ লাগানো হচ্ছে কম। মৌসুমে উৎপাদিত কাঁঠালের দাম না পাওয়া এবং এর কাঁঠের ব্যবহারও আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় এই বিরুপ পরিস্থিতির মুখে পড়ছে দেশ।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. নূরুল ইসলাম বলেন, মৌসুমে রাজধানী ঢাকায় মোটামুটি বড় সাইজের একটি কাঁঠাল বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। দাম না পাওয়া, প্রকিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকা এবং ব্যবস্থাপনার দূর্বলতায় সম্ভাবনাময় জাতীয় ফল কাঁঠালকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ইতোপূর্বে কাঁঠাল নিয়ে তেমন কাজ না হলেও বর্তমানে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা হচ্ছে। আগে সমস্যা থাকলেও এখন কাঁঠালের বহু জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আঠাবিহীন এবং অন্যান্য জাতের কাঁঠালের চারা আনা হয়েছে। থাইল্যান্ড থেকে আনা আঠাবিহীন কাঁঠালের গাছে ইতোমধ্যে ফলও ধরেছে। কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগের কথা ভাবা হচ্ছে। প্রতিকুল অবস্থায়ও বাংলাদেশ কাঁঠাল উৎপাদনকারি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারত রয়েছে প্রথম স্থানে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং নেপালের অবস্থান ৩য়, ৪র্থ এবং ৫ম।
আপনার মতামত লিখুন :