ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভারী চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ সুগারমিলের শ্রমিক কর্মচারীরা ২ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিক্রি-বাট্টা না থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে অবস্থিত দক্ষিণাঞ্চলের এই ভারী চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ সুগারমিল। এ কারণে গত দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না মিলটির ৯ শতাধিকের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিলের গোডাউনে প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। এ কারণে মিল কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংকেট পড়েছে। একই কারণে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতাও বকেয়া পড়েছে। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক-কর্মচারী জানান, মিলের কর্মকর্তারা তাদের বলেছেন, চিনি বিক্রি না হওয়ায় বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে তারা (শ্রমিক-কর্মচারী) বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না, খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। এদিকে, আখ চাষিরা আখ বিক্রির টাকা না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন।
সুগার মিলের মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দিলিপ কুমার বিশ্বাস জানান, মিলের গোডাউনে গত বছরের ১ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন ও চলতি বছরের ১ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টনসহ মোট ৩ হাজার ৫৭২ মেট্রিক টন চিনি রয়েছে। প্রতি টন চিনির মিল মূল্য ৬০ হাজার টাকা। সে হিসেবে মিলের গোডাউনে ২১ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকার চিনি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে।
মিলের মহা-ব্যবস্থাপক (অর্থ) সাইফুল ইসলাম জানান, সুগার মিলে মোট ৯০২ জন শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে গত নভেম্বর মাসে শ্রমিক-কর্মচারীদের আংশিক বেতন দেওয়া হয়েছে। এতে নভেম্বর মাসে ৭০ লাখ ও ডিসেম্বর মাসে দেড় কোটিসহ মোট ২ কোটি ২০ লাখ টাকার বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জিব কুমার দত্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন ভাতা বকেয়া থাকার কথা স্বীকার করে জানান, চিনি বিক্রি না হওয়ায় তিনি বেতন-ভাতা দিতে পারছেন না। চিনি বিক্রি হলে এ সমস্যা কেটে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ক্রয়কৃত আখের সাড়ে ৪ কোটি টাকার ঋণের সমন্বয় ও ৬ কোটি টাকা আখ চাষিদের পরিশোধ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :