ডেস্ক রিপোর্ট: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে যে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার স্বীকারোক্তি এসেছে তারা ‘নিরাপরাধ বেসামরিক’ ছিলেন বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)।
শনিবার তাদের এক টুইট বার্তায় জানানো হয়েছে, “ঐ দিন গ্রামের একটি গণকবরে যে দশ নিষ্পাপ রোহিঙ্গা সিভিলিয়ানের মৃতদেহ পাওয়া গেছে তারা আরসা সদস্য ছিলেন বা আরসার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতাও ছিল না।”
গত ১৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতভি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে উপকূলীয় ওই গ্রামে গণকবরে ১০ জনের মৃতদেহ পাওয়ার কথা জানায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
বুধবার দেশটির সেনাপ্রধানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই ১০ জনকে হত্যা করেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে এবং এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে আরসা সদস্যদের হামলার জবাবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের কথা জানায় নির্যাতিতরা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এই প্রেক্ষাপটে তাদের পক্ষ থেকে ১০ রোহিঙ্গাকে আটকের পর হত্যার স্বীকারোক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিও তাদের এই স্বীকারোক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “বার্মিজ সন্ত্রাসী আর্মির যুদ্ধাপরাধের এই স্বীকারোক্তিকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছি।”
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ১০ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও তাদের ‘বাঙালি সন্ত্রাসী হিসেবে’ বর্ণনা করেছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওই ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, গত ১ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযানে গেলে ‘২০০ বাঙালি সন্ত্রাসী লাঠি ও তরবারি নিয়ে হামলা চালায়’। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদ্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে অন্যরা পালিয়ে গেলেও ১০ জন ধরা পড়ে।
“আইন অনুযায়ী আটকদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা উচিত ছিল। কিন্তু জঙ্গিরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছিল এবং তারা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেনাবাহিনীর দুটি যান ধ্বংস করেছিল। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১০ বাঙালি সন্ত্রাসীকে থানায় হস্তান্তরের কোনো পরিস্থিতি ছিল না এবং তাদের মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
সেনাবাহিনী একথা বললেও তাদের সশস্ত্র বিদ্রোহে সংশ্লিষ্টতার কথা নাকচ করল রাখাইনে এই ধরনের তৎপরতায় নেতৃত্ব দেওয়া আরসা।
তাদের বিবৃতির বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ তাই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ‘সন্ত্রাসী ও গ্রামবাসী এক হয়ে যায়’।
“আমরা আগেই বলেছি, কে সন্ত্রাসী আর কে নিরপরাধ গ্রামবাসী তা বের করা খুব কঠিন। তারা আরসার সদস্য ছিল কি না তার তদন্ত হবে।”
সূত্র: বিডিনিউজ ২৪
আপনার মতামত লিখুন :