ডেস্ক রিপোর্ট : একের পর এক ‘তারকা’ কিনে ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিচ্ছে বার্সেলোনা। রিয়াল মাদ্রিদ কর্তারা তাকিয়ে তাকিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সেই একের পর এক চুক্তি-উৎসব দেখবে আর চুপচাপ ললিপপ চুষবে, তা কিছুতেই হতে পারে না। রিয়াল মাদ্রিদও তাই পরিকল্পনা পাল্টে ‘তারকা’ কেনার পাকা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। নিজেদের রাডারে লিখেও নিয়েছে ৪-৫টি নাম। এডেন হ্যাজার্ড, মাউরো ইকার্দি, হ্যারি কেনের মতো ফুটবলাররাই এখন রিয়ালের ক্রয়-রাডারে। তবে রিয়ালের সবচেয়ে বড় ‘টার্গেট’ নেইমার।
পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রতি রিয়ালের আকাঙ্খার বিষয়টি এখন গোপন কিছু নয়। গত কয়েক মাস ধরেই পিএসজি ছেড়ে নেইমারের রিয়ালে যোগদানের বিষয়ে গুঞ্জন-আলোচনা চলছে। রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের বার্ষিক প্রস্তাবনাতেই লিখে নিয়েছে নেইমারের নাম। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা এবং সাপ্তাহিক ক্রীড়া সাময়িকী ডন ব্যালনের দাবি, এখন রিয়াল সেই প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে মরিয়া। যেভাবেই হোক, নেইমারকে তাদের কেনা চাই।
ডন ব্যালনের দাবি, নেইমারও পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যেতে রাজি! তবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ঠিকানা করার জন্য নেইমার নাকি রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে জুড়ে দিয়েছেন দুটি শর্ত।
তা নিজের প্রতি আগ্রহের মাত্রা প্রমাণে বড় তারকারা প্রায়ই আগ্রহী ক্লাবকে নানা শর্ত দিয়েই তাকে। তবে সেই শর্তেরও তো একটা সীমা-পরিসীমা আছে। কিন্তু নেইমার রিয়ালকে যে শর্ত দিয়েছেন, সেটি শুধু বিস্ময়করই নয়, বলা যায় অসম্ভব কঠিনও!
কি সেই শর্ত? রিয়ালের সভাপতিকে নেইমারের প্রথম শর্ত, বার্নাব্যুতে তাকে ‘একক নেতা’ বানাতে হবে। বার্সেলোনায় যেমন লিওনেল মেসি। এই নম্বর শর্তটি কার্যকর করার পথ পরিস্কার করতেই জুড়ে দিয়েছেন দুই নম্বর শর্ত। বার্নাব্যু থেকে ছাটাই করতে হবে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, গ্যারেথ ও কোচ জিনেদিন জিদানকে!
হ্যাঁ, ডন ব্যালন এমনটাই জানিয়েছে। নেইমার নাকি পেরেজকে সরাসরিই বলে দিয়েছেন, তাকে নিতে হলে রোনালদো ও বেলকে বিক্রি করে দিতে হবে। পাশাপাশি কোচের পদ থেকে জিদানকে বিদায় করে আনতে হবে বিশ্বমানের একজনকে।
মেসির মতো একচ্ছত্র আধিপত্য হয়তো নয়। তবে বর্তমানে ৫ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোই রিয়ালের মাঠের ‘নেতা’। সেই রোনালদো থাকলে নেইমারের পক্ষে একক নেতা হওয়া সম্ভব হবে না, এটা অনুমিতই। কাজেই রোনালদোকে বিক্রি করে দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়ার কারণটাও স্পষ্ট। কিন্তু নেইমার রোনালদোর পাশাপাশি বেল ও জিদানকেও বিদায় করার শর্ত দিলেন কেন?
বেলকে কেন বিক্রি করার দাবি করেছেন, কারণটা স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রোনালদোর পর বেলই রিয়ালের বড় তারকা। ২০১৩ সালে ট্রান্সফার চুক্তির বিশ্ব রেকর্ড গড়েই বেলকে দলে ভিড়িয়েছিল রিয়াল। সেই বেল থাকলে বার্নাব্যুতে নেইমারের ‘একক নেতা’ হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে না! তাই হয়তো পথ পরিস্কার করতে বেলকেও বিক্রি করার আবদার করেছেন নেইমার।
কিন্তু কোচ জিদানকে কেন? প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই বছরেই রিয়ালকে ৮টি শিরোপা জিতিয়েছেন জিদান। সেই জিদানের কোচিং পদ্ধতি নাকি একেবারেই পছন্দ নয় নেইমারের! বার্সেলোনায় থাকতে খুব কাছ থেকেই কোচ জিদানকে দেখেছেন নেইমার। দেখেছেন কোচ জিদানের কৌশলও। যা তাকে একটুও অনুপ্রাণিত করতে পারেনি।
কোচিং পদ্ধতি পছন্দ না হওয়ার বিষয়টি তো জিদানকে বিদায়ের দাবি তোলার অন্য একটা কারণও অনুমান করার চেষ্টা করেছে ডন ব্যালন। খেলোয়াড় হিসেবে জিদান নিজেও ছিলেন বিশ্বসেরা। খেলোয়াড়ী সেই যোগ্যতা থেকেই রিয়ালের খেলোয়াড়দের উপর নাকি জিদানের বিশাল প্রভাব। সবাই একবাক্যে কোচ জিদানের কথা মেনে নেয়।
কিন্তু কোচ হিসেবে নেইমার এমন একজনকে চান, যিনি মানেও বিশ্বমানের হবেন। আবার খেলোয়াড় হিসেবে তাকেও সমীহ করবেন। চোখ গরম করে কোনো আদেশ-নিষেধ করবেন না! মোদ্দা কথা, তার উপর কড়া ‘হেড-মাস্টারগিরি’ ফলাবেন না!
নেইমারকে দলে টানতে রিয়াল কতটা আগ্রহী, সেই প্রমাণ ইতিমধ্যেই মিলেছে। রিয়ালের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সভাপতি পেরেজ পর্যন্ত প্রকারান্তরে নেইমারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রিয়াল কি এতো কঠিন শর্ত মেনে নিয়েও নেইমার-সখ পূরণ করবে? পরিবর্তন
আপনার মতামত লিখুন :