লিহান লিমা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে খবর প্রকাশ করায় ডিসেম্বরে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করে দেশটির প্রশাসন। বুধবার ওই দুই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের প্রসিকিউটর অভিযোগ গঠন করে। এর পরপরই তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এছাড়া, সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটন তার টুইটে বলেন, ‘একটি মুক্ত সমাজের জন্য মুক্ত গণমাধ্যমের বিকল্প নেই। বিশ্বের যে কোন স্থানেই সাংবাদিকদের আটক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। মিয়ানমারে আটককৃত রয়টার্সের সাংবাদিকদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত।’
কো ওয়া লোন (৩১) এবং কায়াও সোয়ে ও (২৭) নামের দুই সাংবাদিককে গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ইয়াঙ্গুন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দু’জনেই মিয়ানমারের নাগরিক। রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতন নিয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করার কাজ করায় তাদের প্রশাসনিক গোপনীয়তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার ইয়াঙ্গুনের একটি আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মিয়ানমারে ১৯২৩ সালে প্রণীত ওই আইনের আওতায় আটক ব্যক্তি দোষি সাব্যস্ত হলে তার ১৪ বছরের কারাদ-ের বিধান রয়েছে।
মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, রাখাইন প্রদেশে স্পর্শকাতর তথ্য নেওয়ার কারণে ওই সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে। তারা এই তথ্য বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের চেষ্টা করছিলেন। এদিকে শুনানিতে রয়টার্স সাংবাদিকরা দাবি করেন, ‘আমরা তাদের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এটাই আটকের কারণ।’
ইইউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণতন্ত্রের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মিয়ানমারের জন্য সাংবাদিকদের আটকের ঘটনাটি একটি পরীক্ষা।’ ইইউ’র মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আশা করি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের পূর্ণ সুরক্ষা এবং অতি সত্বর মুক্তি প্রদান করবে।’
উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। এই হত্যাকা- ও নির্যাতনের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়ে। আল জাজিরা, রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :