ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে মাদক দ্রব্য ইয়াবার ছোবল মারাত্মক আকার নিয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে হাত বাড়ালেই মেলে এখন ইয়াবা বড়ি। নেশায় ডুবে থাকছে উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির হাজারো মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে উঠতি বয়সি যুব সমাজ, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এক সময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে মাদক সেবনের হার কম ছিল। তবে দিন দিন মাদক সেবনের হার বাড়ছে ওই অঞ্চলে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামের এক যায়গা থেকে অন্য জায়গায়। হাটে-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয় ইয়াবা। আইন-শৃঙ্গলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনেই ঘটছে সব। এক শ্রেণির স্থানীয় নেতারা এ ব্যবসার সাথে জড়িত। তারাও সবার চেনা-জানা। তবুও ধরা পড়ে না পুলিশের জালে। পুলিশ বলছে, প্রায়ই অভিযান চালানো হয় এবং মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়মিত টাকা ভাগাভাগি হয়। তাদের সামনে ঘুরে বেড়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা। তবুও গ্রেফতার হয় না। দু-একজনকে ধরলেও পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারাই সহজে জেল থেকে বেরিয়ে এসে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। আবার পুলিশের অভিযানে যেসব ইয়াবা ধরা পড়ে সেগুলোকে মরিচ বা হলুদের গুড়া বলে চালিয়ে দেয়া হয়। ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা জামিনে বেরিয়ে আসে। যেসব স্থানীয় নেতা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তাদেরকে সবাই চেনে জানে। মাদক ব্যবসা এখন ওপেন সিক্রেট।
ট্রানজিট সুবিধায় সমুদ্র পথটাকেই এখন নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করে মাদক ব্যবসায়ীরা। নৌ পথে টেকনাফ থেকে ইয়াবা আসে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে। দক্ষিণের জেলা বরগুনা এবং পিরোজপুর ইয়াবা চালানের বড় ঘাটি হয়ে উঠেছে। ট্রলার যোগে টেকনাফ থেকে সরাসরি ইয়াবা আসে বরগুনার পাথারঘাটা উপজেলায় এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া স্টিমার ঘাটে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পরে জেলার বিভিন্ন জায়গায়। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী এবং ভান্ডারিয়ার তেলিখালী এলাকায় রয়েছে মাদক চালানের বড় ঘাটি। ওই দুই অঞ্চলের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে দুই ভায়রা। তারা ওই অঞ্চলের স্থানীয় নেতা। এদের মধ্যে তুষখালীর ভায়রা সমুদ্র পথে চোরাচালীনের সাথে জড়িত। গত ১৫ বছর ধরে সে ওই অঞ্চলের মাদক নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। চোরাচালানীর দায়ে জেল খাটলেও পথ ছাড়েনি স্থানীয় ওই নেতা।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ সালাম কবিরবলেন, এই অঞ্চলের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের যা যা করা দরকার আমরা তাই করবো।
দক্ষিণের ওই দুই জেলা থেকে ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে পাশ্ববর্তী জেলাগুলোতে। এভাবে ইয়াবার চালান চলে যায় বরিশাল, খুলনা হয়ে সাতক্ষীরায়। আমাদের বরিশাল প্রতিনিধি জানায়, বরিশালের বাবুগঞ্জ, মেহিন্দিগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদি এলাকায় ইয়াবার মারাত্বক ছয়লাব। হাত বাড়ালেই ওইসব অঞ্চলে ইয়াবা পাওয়া যায়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধুরা এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদকের সাথে কোন আপোস নাই। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছি। ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :