শিরোনাম
◈ ইরানের ইস্পাহানে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান

প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:৫০ সকাল
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দামি ওষুধ চীনে নকল করে দেশে এনে বিক্রি

ডেস্ক রিপোর্ট : ওরা নিজেরা পরস্পরকে তিন বন্ধু বলে দাবি করেন। কিন্তু পরিচয় হয়েছিল জুয়ার আসরে। তারা হলেন রুহুল আমিন ওরফে দুলাল চৌধুরী (৪৬), নিখিল রাজবংশী (৪৪) ও মোহাম্মদ সাইদ (৪৫)। রুহুল ও নিখিলের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে, আর সাইদের নোয়াখালীর ছাগলনাইয়া। নির্দিষ্ট কোনো পেশা না থাকলেও সবার কাছে তারা বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তারা চীন থেকে ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী সংগ্রহ করে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করে থাকেন। চলন বলন ও কথাবার্তায় আভিজাত্যের ছাপ। কিন্ত তারা দেশের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর তা গ্রেফতার না হলে কোনোভাবেই জানা সম্ভব ছিল না। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে যাচ্ছিল এ তিন প্রতারক।

জানা গেছে, তারা ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানির আড়ালে চীনে গিয়ে নামিদামি ওষুধ নকল করে (সাধারণত এন্টি ক্যান্সার ও জীবন রক্ষাকারী নানা ওষুধ) আমদানি করতেন দেশে। গত দশ বছর ধরে তারা এ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত থাকলেও কখনো মুখোমুখি হতে হয়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য জানিয়েছেন তারা। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি টিম বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর তাঁতীবাজার ও শান্তিনগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চীন থেকে নকল ওষুধ তৈরি করে তা দেশে এনে বাজারজাত করার কথা স্বীকার করেন। আর তাদের দেয়া তথ্য মতে, উদ্ধার করা হয়েছে ২১ হাজার পাতা নকল ওষুধ (যার মধ্যে রয়েছে এন্টি ক্যান্সার ওষুধ এমটি এক্স, ক্লোমাইড, রিভোকন)।

সিআইডি পুলিশের অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, দেশীয় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি বিভিন্ন সময় মৌখিকভাবে সিআইডির কাছে অভিযোগ করে আসছিল যে তাদের তৈরিকৃত ওষুধের হুবহু নকল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোতে শরীরের জন্য কার্যকরী কোনো উপাদান নেই। ফলে তাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল রোগীরা। এরপরই সিআইডি গত দেড় মাস ধরে গোপনে অনুসন্ধান শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ চক্রের মূল হোতা তিন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডির এ বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার অভিযোগে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু চীনে গিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করে তা দেশে এনে বাজারজাত করার ঘটনা আগে কখনো ধরা পড়েনি। ধারণা করা হচ্ছে, এমন চক্র আরো থাকতে পারে।

নজরুল ইসলাম আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, পরিচয় হওয়ার পর তিন বন্ধু বিভিন্ন ব্যবসায়ীর চাহিদা মোতাবেক ইলেক্টনিক সামগ্রীর ক্যারিয়ার (বহনকারী) হিসেবে বিভিন্ন সময় চীনে যাতায়াত করেছেন। পরবর্তীতে তারা সিন্ধান্ত নেন এন্টি ক্যান্সারসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ নকল করে দেশে আমদানি করবেন। লাভও বেশি পাবেন। এরপরই চীনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন নামি ব্রান্ডের ভেজাল ওষুধ তৈরির অর্ডার দেন। ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডসহ নিম্নমানের উপাদান দিয়ে এ সব ওষুধ তৈরি করা হয়। ওষুধ তৈরির পর তা ইলেক্টনিক্স সামগ্রীর প্যাকেটে ভরে নিজেরাই দেশে নিয়ে আসেন। পরে ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হতো। এদের গোডাউন থেকে উদ্ধার করা হয় এমটিএক্স, ক্লোমাইড ও রিভোকন নামে তিন ধরনের নকল ওষুধ।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, এ সব নকল ওষুধ প্রতি পাতা তৈরি ও আমদানিতে তাদের খরচ হয় ১২ টাকা। দেশে প্রতি পাতার বাজারমূল্য ২০০-৩০০ টাকা। আর তারা এজেন্টদের কাছে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতেন।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম মিলেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-গ(১) এর গ,ঘ ও ঙ ধারায় মামলা হয়েছে। এ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়