রফিক আহমেদ : সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার শীর্ষ নেতারা বলেছেন, এই সরকারের আমলে সেনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক ও ফারমার্স ব্যাংকসহ ব্যাংকখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের’ প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে নেতারা এ কথা বলেন।
বাম জোটের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সরকারি বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। দুদক ও ব্যাংক তাকে দায়মুক্তি দিলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুদক তাদের পুনর্বার জেরা করতে গিয়ে তার দুর্নীতির কাহিনী বেরিয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর তার ভাতিজা অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল হকের উদ্যোগে এ উদ্যোক্তারা প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংকে টাকা লুট করে নিয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের এখন পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক পরিশোধ করারও সামর্থ্য নেই। ফারমার্স ব্যাংকে রাখা জনগণের আমানতের পাশাপাশি তারা সরকারের জলবায়ু সংক্রান্ত তহবিলের শত শত কোটি টাকা যা ফারমার্স ব্যাংকে গচ্ছিত ছিল, তা লোপাট করে দিয়েছে।
বাম জোটের নেতারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিকটজন বলে পরিচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. ফরাসউদ্দীন বলেছেন, গত ৯ বছর অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ও আওয়ামী লীগের সাত বছরের শাসনামলে প্রায় ৬৫ বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আরেক নিকটজন অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেছেন, ঠিক মত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের অর্ধেকের বেশি দেউলিয়া ঘোষণা করতে হবে।
তারা বলেন, এ সরকারের আমলে রাজনৈতিক নেতা কাম ব্যাংক পরিচালক ও লুটেরা ধনিক গোষ্ঠী যোগসাজশে ব্যাংকে রাখা জনগণের আমানত লুট করে নিয়েছে।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, রাজেকুজ্জামান রতন, ফখরুদ্দিন কবীর আতিক ও হামিদুল হক প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিল কদমফোয়ারা, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা ক্রসিং পার হয়ে মতিঝিল সড়কের মুখে ব্যাপক পুলিশী ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। দুই প্রান্ত ব্যারিকেড অতিক্রম করে পুলিশী বাধায় সিপিবি-বাসদ ও বাম মোর্চার নেতা-কর্মীগন সড়কে বসে পড়ে। ব্যারিকেড অপসারণ করতে গিয়ে অন্তত ১০জন নেতাকর্মী আহত হন। সেখানে পুনরায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরফো মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ।
নেতারা ব্যাংকের টাকা লুটপাটকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাদের বিচারের দাবি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :