রাজেকুজ্জামান রতন : বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন চলছে। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ সহকারী শিক্ষক আছেন, তারা একটি নিদারুণ বঞ্চনার জীবন যাপন করছেন। ১৯৮৫ সালেও যেখানে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতনের গ্রেডের পার্থক্য ছিল এক এবং পঞ্চাশ টাকা। সাম্প্রতিক কালে সেটা চার গ্রেডের পার্থক্য করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকরা যেখানে ১১তম আর সহকারী ১৫তম গ্রেডের বেতন পাচ্ছে। ফলে ক্রমাগত শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা অন্যায়, অযৌক্তিক এবং শিক্ষকদের সম্মান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষাদানের যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সেটার পরিপন্থী। আমরা তাই সহকারী শিক্ষকদের এই ন্যায় সঙ্গত দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছি।
যে কোনো দেশের প্রথম ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা যদি অবহেলার শিকার হয়, প্রাথমিক শিক্ষকরা যদি অবহেলার শিকার হন, তাহলে আমাদের কোনো শিক্ষাই তার সৌধ নির্মাণ করতে পারবে না। প্রাথমিক শিক্ষা দুর্বল থাকলে হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সমস্ত ক্ষেত্রেই তার প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশের সবাই আমরা হাহাকার করছি যে, আমাদের শিক্ষার মান কেন কমে যাচ্ছে? কিন্তু কেউ এটা দেখছি না, আমাদের শিক্ষকদের মান, সম্মান কেমন করে কমে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষকদের জন্য সম্মানজনক বেতন কাঠামো চাই। তাদের মানসম্মত জীবন যাপনের পরিবেশ চাই। তাদের মর্যাদাপূর্ণ গ্রেড চাই। বেতন গ্রেড বৈষম্যটা দূর করা উচিত। এই বৈষম্য দূরীকরণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশটাকে যেমন উন্নত করবে, আমাদের ৫০ বছর পরে যে প্রজন্ম আসবে তাদের একটা ভিত্তিও তৈরি করবে।
পরিচিতি : কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, বাসদ
মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :