মতিনুজ্জামান মিটু : জমির স্বল্পতা এবং উৎপাদনশীলতা, উচ্চ ফলনশীল জাত ও উন্নত উৎপাদনকৌশলের দূর্বলতায় দেশে বাড়ছেনা ডাল ফসলের আবাদ ও উৎপাদন। বর্তমান দেশের মোট আবাদযোগ্য ৮৫.০৫ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে ডাল ফসল চাষ হয় মাত্র ৭.৮০ লাখ হেক্টরে। যা আবাদি জমির মাত্র ৯.১৭ ভাগ। আর এতে ডাল উৎপাদন হয় ৮.২৪ লাখ মেট্টিক টন। যা দিয়ে দেশের চাহিদার প্রায় অর্ধেকই মেটানো সম্ভব হয়না। ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছর আমদানি করতে হয় প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন মশুর, মটর, মাস কলাই, ছোলা ও ছোলার ডালসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি সূত্র জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে সুষম খাদ্য তালিকায় একজন মানুষের জন্য প্রতিদিন ডালের দরকার নূন্যতম ৪৫ গ্রাম। অথচ দেশে উৎপাদিত ডাল থেকে জন প্রতি প্রতিদিন মাত্র ১৭ গ্রাম ডালের সংস্থান হয়। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ডাল খেতে সক্ষম এমন ৮ কোটি নারী ও পুরুষের জন্য প্রতি বছরে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন ডাল দরকার। এছাড়া পশু খাদ্য হিসেবেও ছোলাসহ ডাল ফসল ব্যবহার হয়ে থাকে।
ডাল বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠির খাদ্য তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদজাত আমিষ খাদ্য। বহুকাল ধরে এদেশে ডাল ফসলের চাষাবাদ হয়ে আসছে। স্বল্প পরিচর্যা ও বৃষ্টি নির্ভর ফসল হিসাবে অপেক্ষাকৃত কম ঊর্বর জমিতে ডাল চাষ করা যায়। মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটানো ছাড়াও মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়িয়ে মাটির হারানো উর্বরা শক্তি ফিরে পেতে ডালের আবাদ বাড়ানোটাই এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশের ডাল ও ডাল ফসলের আমদানি নির্ভরতা কাটাতে উচ্চফলনশীল জাত ও আধুনিক উৎপাদন কৌশলের প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সময়ের চাহিদা পুরণে দেশের বিজ্ঞানীদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় এ যাবত দেশে ডালের ৩৯টি উন্নত জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি জাত কৃষকের মাঝে আশাও জাগিয়েছে।