ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একুশে ভবন থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কের অধিকাংশই থাকে মাছ দোকানিদের দখলে। বিশেষ করে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত থাকে মাছের ট্রাক ও দোকানিদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ওই সময় গাড়ির দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে। এ ছাড়া হাতিরঝিল মোড় পর্যন্ত রাস্তার উত্তর পাশের দোকানিরা ফুটপাত পুরোটাই দখল করে রেখেছে। গাড়ি পার্কসহ মেরামতের কাজও চলছে সেখানে। কেউ কেউ দোকান সাজিয়ে বসেছে ফুটপাতে। ফলে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে গেছে রাস্তাটি।
কারওয়ান বাজার থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কটি থাকে মাছ ব্যবসায়ীদের দখলে। সড়কটির অধিকাংশ রাস্তাজুড়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বিকিকিনি চলে। ফলে প্রতিদিন এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এ ছাড়া সড়কের উত্তর পাশের মূল ফুটপাত দখল করে রেখেছে গাড়ি মেরামতকারী অসংখ্য দোকান। মূল দোকান ছেড়ে ফুটপাতে গাড়ির সরঞ্জাম সাজিয়ে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত ও মূল রাস্তার বাকি অংশের ওপর রেখে গাড়ি মেরামত করা হয় এসব দোকানে। এ ছাড়া পুরো সড়কের কিনারায় ও ফুটপাতের ওপর গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। ফলে পথচারীদের চলাচলের জন্য ন্যূনতম কোনো সুযোগ থাকছে না। প্রতিদিন এই রাস্তায় যাতায়াত করেন এমন কয়েকজন পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেয়র শুধু হকারদের সঙ্গেই পারেন। এসব দোকানি প্রভাবশালী হওয়ায় এদের ছাড় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। পথচারী সাইদুল ইসলাম জানান, ‘গরিব মানুষ একটু ব্যবসা করলেই দোষ। হকারদের লাঠিপেটা করে তুলে দিতে পারে। অথচ এদের কিছুই বলছে না কর্তৃপক্ষ। সবার প্রতি সমান আচরণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সরেজমিনে গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। প্রতিরাতেই ট্রাকভর্তি মাছ আসছে। আর এই মাছ ঢাকার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। যার সবটুকু কাজই হচ্ছে কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনের সামনে মাছের আড়ত ও তার সামনের রাস্তায়। ব্যবসার প্রয়োজনে রাস্তায় মিনি ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশা রেখে সৃষ্টি করা হচ্ছে যানজট। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিজিএমইএ ভবনের সামনে চলে অবৈধ এ বাজার। প্রতিদিনের এই যানজটের পাশাপাশি অসহনীয় দুর্গন্ধের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অফিসগামী মানুষদের।
শুধু তাই নয়, রাস্তায় ও ফুটপাতে মাছ ব্যবসায়ীরা ফেলে রাখে মাছের বরফ, ড্রাম ও অসংখ্য পলিথিন ব্যাগ। এ চিত্র রাস্তার উভয় পাশের। ফলে সঙ্কুচিত হয়ে গেছে রাস্তাটি। এতে যে যানজট সৃষ্টি হয় তা এফডিসি পার হয়ে হাতিরঝিলের মুখে গিয়ে ঠেকছে।
এ ছাড়া ফ্লাইওভারের নিচে লোহার বেড়ার ভেতরেও বসেছে মাছ বাজার। অনেক স্থানে ব্যবসার সুবিধার্থে লোহার বেড়া খুলে সরিয়ে রেখেছে তারা। এতে মাছ ব্যবসায়ীরা বিপজ্জনকভাবে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। তাতে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। ভাসমান মাছ ব্যবসায়ী রুস্তম আলী জানান, তারা কয়েকটি মহলে চাঁদা দিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন। তার দাবি, এটি রাস্তা হলেও জায়গাটি মূল বাজারের অংশ।
ফুটপাত দখল করে কিভাবে বৈধ বাজার হয়Ñএমন প্রশ্নে শাকিল নামে আরেক মাছ ব্যবসায়ী জানান, এখানে অনেক দিন ধরে বাজার বসছে। ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এখানে মাছ কেনাবেচা হয়। ভেতরে খুচরা মাছ ব্যবসায়ীরা যায় না। তাই ফুটপাতে তারা মাছ বিক্রি করেন। এ জন্য প্রতিঢালা হিসাবে তারা লাইনম্যানকে দৈনিক ২০০ টাকা দেন। যার ভাগ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের লোকজন পেয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের কারওয়ান বাজারের (অঞ্চল-৫) নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম অজিয়র রহমান বলেন, মাসখানেক আগেই ফুটপাতের মাছ বাজার ও অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকবার অভিযানের পর জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও দোকানিরা বসছে। তিনি আরো বলেন, ফুটপাতের মাছ বাজারের জন্যই এ রাস্তায় যানজট লেগে থাকে। কিন্তু অভিযান শেষে কয়েক দিন পর তারা আবারও বসে পড়েছে। আমরা আবার অভিযান চালাব। প্রতিদিনের সংবাদ
আপনার মতামত লিখুন :