সোহেল রানা,মৌলভীবাজার : শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বারামপুর ইসলামীয়া এবতেদায়ী মাদরাসায় পূর্ণরায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার নামে মাদরাসা থেকে ৩৫-৪০টি আকাশমণি গাছ কেটে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রায় ২৭ বছরের পুরনো ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নামও পাল্টে নিয়েছে প্রভাবশালী মহলটি। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেছেন মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতা পরিবার। জানা গেছে কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের বারামপুর গ্রামের আব্দুল খালিক চৌধুরী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠায় বারামপুর ইসলামীয়া এবতেদায়ী মাদরাসা নামে একটি মাদরাসা করেন। তিনি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯১ সালের ২৯ সেপ্টেম্ববর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর ৪০ শতক দানপত্র মুলে রেজিষ্ট্রি করে দেন। পাশাপাশি দাতা হিসাবে আব্দুল খালিক মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে মাদরাসাটি বোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হলে তৎকালিন প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন নিয়মিত সরকারী ভাতাপ্রাপ্ত হন। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস খালিক চৌধুরী ২০০৬ সালে মারা গেলে মাদরাসার প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন স্থানীয় প্রভাবশালী কুচক্রি মহলের প্রলোবনে পড়ে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন এবং নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে দাতা পরিবারের কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে মৌলভীবাজারের লন্ডন প্রবাসী জনৈক আব্দুস সত্তারের কাছ থেকে মোটা অংকের নগদ অনুদান নিয়ে মাদরাসার নাম পরিবর্তন করে আব্দুস সত্তার বারামপুর এবতেদায়ী ইসলামীয়া মাদরাসা নামকরণ করা হয়। পরে অনুদানদাতা লন্ডন প্রবাসীর মেয়ের জামাই আব্দুল আহাদ ওরপে আরিফ উল¬্যাকে সভাপতি করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল খালিকের ছেলে এম এ ওয়াহিদ চৌধুরীকে বাদ দিয়ে স্বঘোষিত ওই পরিচালনা কমিটি গঠন করার পর পরই মাদরাসা ফান্ডের অর্থ লুটপাট করে প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন গোপনে বিদেশ ফাঁড়ি জমান। পরবর্তীতে শিক্ষক মাসুক উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিলেও বিগত ৪-৫ বছর ধরে ওই মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় গত ১০ ডিসেম্বও থেকে স্বঘোষিত মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে মাদরাসার প্রায় ২৬ বছরের পুরনো ৩৫-৪০টি আকাশমণি কাজ কেটে নেয়া হয়। মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেঞ্চ-টেবিল তৈরি করার কথা বলে গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ব্যাপারে মাদরাসাটির ভুমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস খালিক চৌধুরীর পুত্র এম এ ওয়াহিদ চৌধুরী গত ১৭ ডিসেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ করার সংবাদ পেয়ে দ্রুত মাদরাসা এলাকা থেকে কাটা গাছগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। আলাপকালে এম এ ওয়াহিদ বলেন,মাদরাসার সম্পত্তি লুটপাটের জন্য গোপনে অবৈধপন্থায় মাদরাসা পরিচালনার নামে স্বঘোষিত কমিটি গঠন কওে প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি লুটপাট করা হচ্ছে। মারদরাসার দায়িত্বে থাকা সুপারের সহযোগীতায় শিক্ষা কার্যক্রম চালুর নামে আসবাবপত্র তৈরী করার নামে গাছগুলো কেটে লুটপাট করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। অভিযোগ বিষয়ে আলাপকালে আব্দুল আহাদ নিজেকে মাদসারা পরিচালনা কমিটির সভাপতি পরিচয় দিয়ে বলেন,মাদরাসার আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য রেজুলেশন করে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই গাছগুলি কাটা হয়েছে বলে জানালেও এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :