আবু সাঈদ খান : সাংবাদিক উৎপল দাস হারিয়ে যাওয়ার ৭০ দিন পরে ফিরে এসেছে ঠিক। তার মানে এই নয়, আমাদের নাগরিক জীবনে স্বস্তি এসেছে। উৎপল দাসের ফিরে আসা সম্পূর্ণই রহস্যের জালে ঘেরা। উৎপল নিখোঁজ হওয়ার পরে আমাদের নাগরিক জীবনে যে উৎকণ্ঠা এবং দুশ্চিন্তার সৃষ্টি হয়েছিল, তাকে ফিরে পাওয়ার পরে সেই দুশ্চিন্তা এখন জট পাকিয়ে গেছে। কেননা, উৎপলের কি হয়েছিল? তিনি এতো দিন কোথায় ছিলেন, কিভাবে ছিলেন? কিভাবে ফিরে এলেন? নাকি নিজে আত্মগোপনে থেকে ফিরে এসেছেন? এরকম অগণিত প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু এবিষয়ে কিছুই জানা যাচ্ছে না। যার ফলে রহস্য আরও গভীর হয়েছে। উৎকণ্ঠা কাটছে না।
বর্তমানে আমাদের সমাজে গুম শব্দটি বহুল পরিচিতি পেয়েছে। কেননা, একের পর এক রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, সকল পেশার মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে। এদের কেউ কেউ দীর্ঘদিন পরে ফিরে আসছে। আবার কেউ আর ফিরে আসছে না।
ফিরে আসা মানুষেরা মুখ খুলছে না। আবার তারা যা বলছে, তা বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে তারা যেন কিছু লুকাচ্ছে। আমাদের কাছে প্রশ্ন জেগেছে, তারা কি মুখ খুলতে পারছে? তারা যা বলতে চাচ্ছে তা কি তারা বলতে পারছে? চেহারা দেখে মনে হয়, তারা একটা চাপের মুখে আছে। যার ফলে মানুষ বলছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের গুম করা হয়েছে। কখনো কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ঘুমের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে এবং মানুষ তার সত্যতাও পেয়েছে। যার ফলে এখন কেউ হারিয়ে গেলেই গুম শব্দটি ব্যবহার করা হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দোষারোপ করতে দেখা যায়। অপরদিকে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযোগ অস্বীকার করছে।
কিন্তু আমি বলছি, সর্বোপরি হিসাবে মানুষ হারিয়ে যাওয়া এবং তাদের ফিরে আসা বা খুঁজে বের করা সকল দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তারা কেন হারিয়ে গিয়েছিল? কিভাবেই ফিরে এলো? এসকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজে বের করে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। তবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই দায় এড়াতে পারে। সেই সাথে নিখোঁজ সকল ব্যক্তিদের সন্ধানও দিতে হবে। তাছাড়া অন্য কোনো উপায়ে এই দায় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুক্তির কোনো উপায় নেই। সাধারণ মানুষের অভিযোগের তীর তাদের দিকেই যাবে।
পরিচিতি : সিনিয়র সাংবাদিক
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :