জাকারিয়া হারুন : পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে চীনা মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে বেইজিং। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহসান ইকবাল জানিয়েছেন, চীনের এই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহসান ইকবাল চীন-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক করিডোরের একাংশের কাজ শুরু উপলক্ষে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে চীনের প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, চীন-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক করিডোর তৃতীয় কোনো দেশের জন্য হুমকি নয়। বরং বিশ্বের যে কোনো দেশ চাইলে এই করিডোরের সুফল ভোগ করতে পারবে।

চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে এ যাবতকালের মধ্যে সর্ববৃহৎ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা হচ্ছে এই অর্থনৈতিক করিডোর। পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি ডলার ব্যয়ে এই করিডোর নির্মাণের কাজ শেষ হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর থেকে শুরু করে দেশটির ওপর দিয়ে চীন পর্যন্ত বিশাল মহাসড়ক নির্মাণ করা হবে। এই করিডোর নির্মিত হলে চীনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে পাকিস্তান ব্যাপকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন এই মহাসড়ক নির্মাণের নামে আসলে পাকিস্তানকে বড় অঙ্কের ঋণের জালে ফেলছে বেইজিং।

বেলুচিস্তানের গোয়াদর বন্দরে চীনা বিনিয়োগে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। তাদের ধারণা, এভাবে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ধারাবাহিকতায় এক সময় পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলবে বেইজিং। আর এমন ধারণা যদি বাস্তব রূপ নেয় তাহলে সেটা একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতকে এ অঞ্চলে বেকায়দায় ফেলে দেবে। তবে কাজ এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর চীন। আর তাই গোয়াদরের বাসিন্দাদের মন জয়ের চেষ্টার পাশাপাশি সেখানে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সন্দেহ ভবিষ্যতে বন্দরটিকে চীনা নৌবাহিনীর কাজে লাগানো হবে।

গোয়াদরে বিনিয়োগের সুফল হিসেবে আগামী ৪০ বছর বন্দরের ৯১ শতাংশ শুল্ক আদায় করবে চীন। আর তাদের বিদেশি বন্দর পরিচালনা প্রতিষ্ঠানটিও ২০ বছরের জন্য বড় ধরনের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। সূত্র: ডন, বিবিসি,