প্রত্যাশা প্রমিতি সিদ্দিক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডিসেম্বরের ৬ তারিখে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবার পর থেকেই পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত গাজা, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেমে এই বিক্ষোভ আরো তীব্র মাত্রায় চলছে।
এরই মাঝে গতকাল গাজায় দুই পা হারানো এক পঙ্গু বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনায় ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাই কমিশনার জায়েদ রাদ আল হুসেইন।
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ইব্রাহিম আবু থুরায়েহ নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কিছু আগের ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায় হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে সে স্লোগান দিচ্ছিলো এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছিলো। এর কিছুক্ষন পরেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
থুরায়েহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় একটি বিবৃতি দেন জায়েদ রাদ আল হুসেইন। তিনি বলেন, ‘আবু থুরায়হ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য হুমকি ছিলেন তা কোনোভাবেই বলা যায় না। গাজায় কাজ করা জাতিসংঘের কর্মীরা জানিয়েছেন তার ওপর বলপ্রয়োগ করা হয়েছিল।’
নিহত হওয়ার দুই দিন আগে থুরাইয়াহ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রতি একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেছিলেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘জায়নবাদী দখলদার সেনাবাহিনীর প্রতি আমার বার্তা, এই ভূখন্ড আমাদের। আমরা এটার অধিকার ছেড়ে দেব না। যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, মৃত্যুর আগে আবু থুরাইয়াহ গাজা উপত্যকার ইসরায়েল সীমান্তে প্রতিবাদের আদর্শ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ২০০৮ সালে গাজার আল-বুরেইজ শরণার্থী ক্যাম্পে এক ইসরাইলি বিমান হামলায় আবু থুরাইয়াহ দুই পা ও একটি কিডনি হারান। ওই হামলায় আরও ৭ ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন। কিন্তু এরপরও থেমে যাননি তিনি। তিনি (আবু থুরাইয়াহ) বাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে করে গাজা শহরে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে মিছিলে যোগ দিতেন। ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে নিহত হওয়ার সময়ও তার হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ছিল।
ফিলিস্তিনি প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠা আবু থুরাইয়াহর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার মানুষ গাজা শহরে উপস্থিত হয়। রয়টার্স, এএফপি
আপনার মতামত লিখুন :