শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ◈ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ: এডিবি ◈ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৪ সদস্য ◈ ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার তালিকা প্রকাশ করুন: মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৩ সকাল
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওয়াসার পানিতে তীব্র দুর্গন্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট : উত্তর কমলাপুর, দক্ষিণ কমলাপুর, গোপীবাগ ব্রাদার্স ইউনিয়ন মাঠ, গোপীবাগ বিশ্বরোড, টিটিপাড়া, কবি জসীমউদ্দীন সড়ক, কমলাপুর বাজার সড়ক, বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি, সোনালী ব্যাংক কলোনি ও কমলাপুর রেলস্টেশনের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৮নং ওয়ার্ড। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ; ভোটার ২৩ হাজার।

ডিএসসিসির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এই ৮নং ওয়ার্ড। অথচ সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ওয়াসার পানি নিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে বাসিন্দারা। ওয়াসার পানি পান অনুপযুক্ত। এ ছাড়া পুরো ওয়ার্ডজুড়েই রয়েছে মাদকের উৎসব। দিনেরবেলা বড় রাস্তার পাশে মাদকসেবন, এমনকি অনেক জায়গায় জমে উঠেছে মাদকের হাট।

জানা গেছে, ওয়াসার পানি পান করা অনুপযুক্ত; এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ অনেক দিনের। ওয়ার্ডের ড্রেনেজব্যবস্থাও ত্রুটিপূর্ণ। ফলে অনেক জায়গায় পানির সংযোগ ও পয়ঃনিষ্কাশন সংযোগ মিলে এক হয়ে গেছে। ওয়ার্ডের সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের অভিযোগ নিত্যদিনের। খোদ কাউন্সিলর ও ওয়াসা কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করলেও অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। পানির জন্য একমাত্র ভরসা বালুরমাঠ ও কমলাপুর ওয়াসা পাম্প। দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় সরবরাহ করা হয় পরিষ্কার পানি।

গোপীবাগ ৬নং সড়কের বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, দুর্ভোগের এখানেই শেষ নয়। পানির জন্য প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকতে হয় দীর্ঘলাইনে। অন্যদিকে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না এ অঞ্চলে। থাকলেও তা দিয়ে রান্না হয় না বলে জানান তিনি।
নানা দুর্ভোগের ওপর এই ওয়ার্ডে মাদকের প্রকপ চূড়ান্ত পর্যায়ে। দিনের আলোতেও বড় রাস্তার ধারে চলে মাদকসেবন।

সরেজমিন দেখা যায়, কমলাপুর রেলস্টেশনের গা ঘেঁষে নেশায় নিথর হয়ে পড়ে আছে মাদকসেবীরা। পাশেই সুই ব্যবহার করে নেশাদ্রব্য নিচ্ছে একদল মাদকসেবী। গোপীবাগ রেললাইনের দুই ধারেও চলছে প্রকাশ্যে মাদকসেবন।
টিটিপাড়া ওয়াসা পাম্পের সামনে জমে উঠেছে মাদক ব্যবসা। পুরো দিন হাতবদলে চলে মাদক কেনাবেচা। এ ছাড়া পাশের দক্ষিণ কমলাপুর রেলওয়ে কলোনির মেথরপট্টিতেও দেশি মদসহ ইয়াবা, গাঁজার যেন হাট বসেছে। মাসখানেক আগে এই পট্টিতে মাদক ব্যবসায়ী চক্রদের নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান চালানো হলেও নেই কোনো পরিবর্তন।
নারীরাও জড়িত এ ব্যবসায়। মাদকের টাকার ভাগ চলে যায় প্রশাসনের পকেটেও। প্রভাবশালী নেতাদের দৌরাত্ম্যে দিনেরবেলাতেও মাদক ব্যবসায়ীরা সক্রিয়।

মেথরপট্টির সামনে বিপ্লব কর্মকার নামে এক মাদকসেবী বলেন, ‘রাস্তার ধারে কারণ ছাড়া যাগো পাঁয়তারা করতে দেখতাছেন, সবগুলা গুটি আর পোটলা কিনতে আসছে। পুলিশ সইড়া গেলেই লাফঝাপ শুরু হইয়া যাইব দেইখেন।’ মাদক বিক্রেতাদের নাম জানতে চাইলে চুপ হয়ে যান তিনি।
অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সাধারণ দৃশ্য এ ওয়ার্ডে। দক্ষিণ কমলাপুরের বাসিন্দা মো. রমিজ জানান, মসজিদ গলি, কবরস্থান সড়কসহ এ অঞ্চলের অনেক গলিতে জমে হাঁটুপানি। ওয়ার্ডের অন্য পাশে গোপীবাগের অবস্থাও একই রকম বলে জানান স্থানীয় আবদুল জলিল।

পর্যাপ্তসংখ্যক পরিচ্ছন্নকর্মী ও ময়লার ভ্যান দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের কলোনি ছাড়া ওয়ার্ডের প্রায় সর্বত্রই রাস্তার ওপর ময়লার স্তূপ।

সরেজমিন দেখা যায়, গোপীবাগ, গোপীবাগ রেললাইনের দুই ধার, রেলওয়ে কলোনি, দক্ষিণ কমলাপুরের ওলিগলি, বিআরটিসি বাস ডিপো, কমলাপুর রেলস্টেশনসহ অনেক জায়গায় জমে আছে ময়লার স্তূপ। কাউন্সিলরের অফিসের ঠিক পেছনেই গোপীবাগ বালুরমাঠের পাশে দেখা গেছে এলাকার সব থেকে বড় ময়লার স্তূপ।

অবৈধ দখলে আছে রাজউক ও রেলওয়েসহ বহু সরকারি জমি। ওয়ার্ডের অন্যতম মতিঝিল নামক ঝিলটির সীমানা ও মালিকানা নিয়ে চলছে বহুদিনের দীর্ঘসূত্রতা। বর্তমানে তা মৃত করিম মেম্বারের ছেলেদের দখলে আছে বলে জানা গেছে। সেখানকার অবৈধ স্থাপনা থেকে দিব্যি পকেট ভারী করছেন তারা।

অন্যদিকে সাদেক হোসেন খোকা সেন্টারের আগপিছে রাজউকের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ। গোপীবাগ বালুরমাঠটিও পরিণত হয়েছে ট্রাকস্ট্যান্ডে। বিআরটিসি বাস ডিপোর সামনে গড়ে উঠেছে অবৈধ বাস পার্কিং। ফলে কমলাপুর স্টেশনের সামনের সড়কটিতে দিনের প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে, যা ওয়ার্ডের যাতায়াতের ভোগান্তির প্রধান কারণ।

ওয়ার্ডটিতে নেই অনেক নাগরিক সুবিধা। নামমাত্র একটি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও নেই কোনো হাসপাতাল। নেই কোনো কমিউনিটি সেন্টার। সরকারি দুটি প্রাথমিক ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় মিলিয়ে ওয়ার্ডে কেবল ১০ থেকে ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সূত্র : আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়