যতীন সরকার : বাংলাদেশে ভয়াবহ আকারে তরুণ প্রজন্ম উগ্রবাদী। একটা বড় সংখ্যক তরুণদের মধ্যে যে উগ্রতা দেখা দিয়েছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই উগ্রতাবাদীর বিষয়টা কেবল মাত্র বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতেই দেখলে চলবে না। ১৯৯০ এর গোড়াতে পৃথিবীর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে গেল, তার পরে সাধারণ ভাবে সমগ্র সমাজের সামনেই প্রকৃতির যে জীবন দর্শন সেটা রইল না। আগে তরুণরা সাধারণ ভাবে এই সমাজ পরিবর্তনের কথা লক্ষ্য রেখে চিন্তা চেতনা করত। কাজেই সামগ্রিক ভাবে উগ্রবাদ দেখা দেয়নি। বিচ্ছিন্ন ঘটনা সব ক্ষেত্রেই থাকে। সমাজতান্ত্রিক সমাজের বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পরে একটা সমর্থক দর্শক তরুণ সমাজের সাথে যায়নি। শুধু তাই নয় সারা পৃথিবীজুড়ে আজকে ধর্মপন্থী মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এমন ভাবে বিস্তার লাভ করছে সরকার থেকেও ধর্মতান্ত্রিক মৌলবাদের বিস্তার দেখা দিচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণভাবে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতি হলো লুটপাট কেন্দ্রিক রাজনীতি। এই রাজনীতিতে যারা যে দলেই থাকুন কোনো আদর্শ নেই। যে আদর্শে তরুণরা আদর্শবান হয়ে গড়ে উঠবে। বরং এই রাজনীতিতে বিভিন্ন গ্রুপ তরুণদের ব্যবহার করে এবং আরেকটি গ্রুপ সৃষ্টি করে। বিশ্বের যে বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যেও একটা বিপুলসংখ্যক অঙ্কের মধ্যে এই উগ্রবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রগতিশীল, চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবীরা তাদের একটা দায়িত্ব আছে যে এমন একটা সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তরুণ সমাজ যথার্থ অর্থেই সমর্থক, যুক্তিবাদী, মননশীল, চিন্তা চেতনার অধিকারী হতে পারে। এই কাজটি শুরু করার দায়িত্ব চিন্তাশীল, বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্যে। এইটি করলেই তরুণ সমাজের উগ্রবাদ দূর হয়ে যাবে বলে আমার ধারণা।
পরিচিতি : শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন
আপনার মতামত লিখুন :