নাসিমা খান মন্টি : নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী নেত্রী হিসেবে বিশ্ব তার কাছে এমনটি আশা করেনি। তিনি ভবিষ্যৎ আঁচ করতে পারেন। আর সেই কারণেই ১৫ বছর গৃহবন্দি থেকেও নিজের অবস্থানে থেকেছেন অটল, অবিসংবাদিত। কিন্তু এবার বোধহয় ভবিষ্যৎ গণনায় ভুল হলো তার। নিজদেশের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দুঃখ যেমন বুঝলেন না, আবার এবিষয়ে নিজের ভূমিকা ও ভাবমূর্তিও ঠিক রাখতে পারলেন না। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে এই গণহত্যার হোতা বলা হলেও, এই ধরনের জাতিগত নিধনযজ্ঞ সরকারের উপর মহলের ইশারা ছাড়া কিংবা তাদের অজ্ঞাতসারে হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। অর্থাৎ, সুচিরও এই বর্বর ও নৃশংস অপরাধে দায় ছিলো। বিবিসি
ধারণা করা হচ্ছে, অং সান সুচিকেও ভবিষ্যতে গণহত্যার দায়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মনে করেন, সুচি ও মিয়ানমার সেনাপ্রধানকে ভবিষ্যতে কোনো একসময় গণহত্যাকারী হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে। তিনি আরো বলেন, গণহত্যা এমন এক অপরাধ যেটিতে খুব কম মানুষই অভিযুক্ত হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখিয়েছে, যখন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিয়ানমার সরকার রোাহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার সমঝোতা চুক্তি স¦াক্ষর করছিলো, তখনও রাখাইনে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। এতেই প্রমাণিত হয় মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি লোকদেখানো। আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়েই এই সুকৌশলী সমঝোতা।
আধুনিক মিয়ানমারের জনক অং সান-এর কন্যা ও ডি ফ্যাকটো লিডার অং সান সুুচি অতীতের সকল অর্জন বিসর্জন দিয়ে সেনাবাহিনীর অন্যায়ের কাছে হার মেনে নিলেন। মিয়ানমার সেনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গৃহবন্দি হবার শারীরিক সামর্থ্য মনেহয় তার আর নেই। রাখাইন মুসলমানদের রক্ষা করতেও আর কেউ এগিয়ে আসার নেই। তাই এখন প্রশ্ন, অং সান সুকি কি ভবিষ্যতে গণহত্যার অপরাধে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে কাজ করবেন নাকি সাড়া দেবেন মানবতার ডাকে? সম্পাদনা : সান্দ্রা নন্দিনী
আপনার মতামত লিখুন :