শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০১:০৭ রাত
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০১:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাশ্মীরে প্রতিযোগিতা চলছে পাকিস্তান ও ভারতের

মাছুম বিল্লাহ : বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর অঞ্চলে কয়েকশ’ মিটার মাটির গভীরে বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে দিন-রাত কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। সেখানে উপমহাদেশের ফুরিয়ে আসা ভূ-গর্ভস্থ বিশুদ্ধ পানির সন্ধানে প্রতিযোগিতায় নেমেছে পাকিস্তান আর ভারত।

প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশ বেশ অনেক বছর ধরেই নীলজলের নীলাম নদীর কূল বরাবর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজ করছে। কাশ্মীরের প্রকৃত সীমানারেখা বা নিয়ন্ত্রণরেখার দুই পাশে এই দুটি প্রকল্প প্রায় শেষের দিকে। এই প্রকল্প দুটি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

উজানে ভারতের প্রকল্পের কারণে হয়তো ভাটির দিকে তাদের প্রকল্পটি যথেষ্ঠ পানি পাবে না ভেবে পাকিস্তান এখন বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই শত্রু দেশের মধ্যে ৭০ বছর ধরে যে সংঘাত চলে আসছে, তার কেন্দ্রে এই হিমালয়ান রাজ্য কাশ্মীর। এলাকাটা তাদের বলে দাবি করছে দুই পক্ষই।

নীলাম নদীর পানি নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ দুই দেশেরই মিষ্টি পানির চাহিদা।

তাদের বেড়ে চলা জনসংখ্যা ও সম্প্রসারণশীল অর্থনীতি কমে-আসা পানির উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা ও দীর্ঘ-মেয়াদি প্রবৃদ্ধিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সাবধান করা হয়েছে।

পারিপার্শ্বিক ভূ-প্রকৃতির বাস্তবায়তায় এ সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে।

যেখানে নীলাম নদী গিয়ে পড়েছে, সেই সিন্ধু মহাদেশের অন্যতম দীর্ঘতম নদী।

এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এ নদী।

তিব্বত থেকে উৎপত্তি হয়ে, কাশ্মীর দিয়ে পাকিস্তানের ৬৫ শতাংশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভারত মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিস্তীর্ণ উর্বর পাঞ্জাব প্রদেশও রয়েছে, যাকে পাকিস্তানের খাদ্য গুদাম বিবেচনা করা হয়।

বিশ্ব ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ১৯৬০ সালে সিন্ধু পানি চুক্তি সই হয়, যা আসলে দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। দুই দেশের তিক্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসের মধ্যে একে একটি কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এই চুক্তির অধীনে পূর্ব দিকের তিনটি নদীর (বিয়াস, রবি এবং সুটলেজ) পানির নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে ভারত এবং পশ্চিম দিকের তিনটি নদীর (ইন্দুজ, চেনাব ও ঝিলাম) পানির নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে পাকিস্তান।

ঝিলামের উপনদী নীলাম পাকিস্তানের ভাগে পড়ে। প্রায় সিকি শতাব্দী আগে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কিষানগঞ্জ প্রকল্পের বিপরীতে নীলাম-ঝিলাম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করে পাকিস্তান।

নীলাম ও ঝিলামের সঙ্গমস্থলে অতিকায় ভূ-গর্ভস্থ কংক্রিট আর স্টিলের কাঠামো নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে। চারটি জেনারেটরও বসানো শেষ। এখন শুধু ট্রান্সফর্মার বসানো আর নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগের জন্য অপেক্ষা।

৬ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানী ও চীনা কর্মী ভূ-গর্ভস্থ ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে কাজে ব্যস্ত। হিমালয় অঞ্চলের একেবারে কেন্দ্রে ৪০০ মিটার পাথরের নিচে এই টানেলের অবস্থান।

কাজ শেষ হওয়ার পর, এই ড্যাম থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি ৯৬৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভারতীয় অংশে কিষানগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজও প্রায় শেষের দিকে। ২০১৭ এর শেষ দিকে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়েছে।

কাশ্মীরের চলমান অস্থিরতার কারণে এটা পিছিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।

পাকিস্তান এরইমধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে মামলা দায়ের করেছে ভারত ও নীলাম ড্যামের বিরুদ্ধে, যার মাধ্যমে অনৈতিকভাবে উজান থেকে পানি টেনে নিচ্ছে ভারত।

পাকিস্তানী প্রকল্পের ডিরেক্টর নায়ার আলাউদ্দিনের মতে, ভারতীয় প্রকল্পের কারণে তাদের উৎপাদন ১০-১৩ শতাংশ কমে যেতে পারে ।- সাইথ এশিয়ান মনিটর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়