রাশিদ রিয়াজ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে হোয়াইট হাউজ বিশ্বের অন্তত ১৪৯টি দেশে বিশেষ অভিযান চালিয়ে রেকর্ড স্থাপন করেছে। বিশ্বের এসব দেশে মার্কিন সেনা মোতায়েন কিংবা অভিযানে অংশ নিয়ে এক বিশাল ও বিস্তৃত সামরিক তৎপরতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্পুটনিক
মার্কিন তথ্য অনুযায়ী ইউএস স্পেশাল অপারেশনস ট্রুপস, নেভি সিলস ও আর্মি গ্রিন ব্যারেস’এর সেনাদের ১৪৯ টি দেশে মোতায়েন বা বিশেষ অভিযানে অংশ নিয়েছে। এধরনের সেনা নিয়োগ বা অভিযানের বিষয়টি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলের চেয়ে দেড়শ’গুণ বেশি এবং সারাবিশ্বে মার্কিন সামরিক শিবিরের জন্যে একটি আধুনিক রেকর্ড। ইউএস স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডের প্রধান জেনারেল রেমন্ড থমাস বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। মার্কিন বাহিনী বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস বিরোধী প্রচারিভিযানকে আরো শক্তিশালী ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিয়োজিত রয়েছে।
তবে বিশ্বে মার্কিনীদের এধরনের সামরিক উপস্থিতিকে অন্যদেশের সম্পদ হরণ ও কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ার মত বিষয় হিসেবে দেখছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে ক্যাপিটল হিলের সদস্যদের উদ্বেগ বাড়ছে। গত অক্টোবর মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্য তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমরা জানিনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঠিক কত সংখ্যক মার্কিন সেনা আছে এবং তারা ঠিক কি করছে। পশ্চিম আফ্রিকার নাইজারে ইউএস স্পেশাল অপারেশনের চারজন সেনা মারা যাওয়ার পর সিনেটর লিন্ডসে এ প্রশ্ন তোলেন।
এদিকে অধিকাংশ মার্কিনী বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ স্থানে দেশটির সেনা মোতায়েনের বিষয়টিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বলে জানান, সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির আর্মস এন্ড সিকিউরিটি প্রজেক্টের পরিচালক উইলিয়াম হারটাং। তিনি এও জানান, এসব মার্কিন সেনা বিভিন্ন দেশে কি করছে সে সম্পর্কে কোনো স্বচ্ছতা নেই এবং থাকলেও তা খুবই সামান্য। কারণ প্রশ্ন উঠছে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না উল্টো উত্তেজনা ও দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি করছে।
তবে জেনারেল থমাস বলেন, নাইন ইলেভেনের পর বিভিন্ন দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতি পূর্বের চেয়ে ৭৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়। গ্লোবাল মিলিটারি আউটরিটের পর্যক্ষেণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী সামরিক প্রসারে আগামী বছর তা শিথিল করার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং ট্রাম্প প্রশাসন ইয়েমেন ও সোমালিয়ায় আরো নতুন করে মার্কিন সেনা নিয়োগ দিয়েছে। বারাক ওবামার প্রশাসনের শেষ ৬ মাসের তুলনায় গত ৬ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ গুণ। এ বছর ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, নাইজার ও মালিতে মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনাও ঘটে।
আপনার মতামত লিখুন :