ডেস্ক রিপোর্ট : অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৭৩ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বছর শেষে এ সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কর্মী প্রেরণের সংখ্যা বাড়লেও কমেছে রেমিট্যান্স। একইসঙ্গে শ্রমিক হয়রানি, নারী কর্মীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। অন্য যেকোনো দেশের কর্মীদের তুলনায় অভিবাসনে এখনো অনেক বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের। এসব সমস্যা ও বাস্তবতাকে সামনে রেখে আজ সোমবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস।
‘নিরাপদ অভিবাসন যেখানে, টেকসই উন্নয়ন সেখানে’— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৭ উদযাপনের লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
গতকাল রবিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জনশক্তি রপ্তানির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। তিনি বলেন, বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরে রেকর্ড সংখ্যক ১০ লাখের বেশি কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হবে। এখন পর্যন্ত এক লাখ ১৮ হাজার নারী কর্মীরও কর্মসংস্থান হয়েছে। মন্ত্রী জানান, শিগগিরই জাপানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের পাঠানো হবে। দিবসটি উদযাপনে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিটি জেলায় র্যালি, আলোচনা সভার পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টিমূলক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. নমিতা হালদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) আমিনুল ইসলাম, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৩ বছরে ৩৩ হাজার মৃত্যু: এদিকে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেইফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন’ (ওশি) জানিয়েছে, গত ১৩ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ৩৩ হাজার ১১২ বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেছেন। এ বছর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩১৫৪ জন অভিবাসী শ্রমিকের লাশ বাংলাদেশে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ আর চৌধুরী রিপন বলেন, ১৯৭৬ সাল থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এক কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ১৮১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি বলেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বিদেশে যাবার আগে শ্রমিকদের যে ব্রিফিং দেয় সেখানেও পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে কিছু বলা হয় না। ফলে শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সময় নিজেদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কেও অসচেতন থেকে যাচ্ছেন।
ওশির পক্ষ থেকে বিএমইটি প্রদত্ত প্রশিক্ষণ ও ব্রিফিংয়ে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, বিদেশ ফেরত শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুব্যবস্থা, বিদেশে বাংলাদেশের শ্রম উইংগুলোতে অকুপেশানাল সেইফটি অ্যান্ড হেলথ হেল্পলাইন চালু করা এবং গন্তব্য দেশের সাথে যৌথ শ্রম পরিদর্শন এবং প্রতিবেদন তৈরির ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপার্সন ড. এস এম মোর্শেদ। ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :