শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৫:৪১ সকাল
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৫:৪১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আ.লীগ বিরোধী প্রচারণায় কৌশলী জামায়াত

তারেক : বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান চাপে থাকা জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রপাগান্ডা প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিচালনা করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বাংলা মুসলিম সংবাদমাধ্যমে কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর কলকাতাভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জামায়াতের এই কৌশল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ঈদুল ফিতরে একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় দুটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এই দুটি প্রবন্ধ কলকাতা শহরভিত্তিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রথম প্রবন্ধটির শিরোনাম ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধের কবলে বাংলাদেশ’। এতে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রবল সমালোচনা করা হয়েছে। অভিযোগ তোলা হয়েছে, মানুষের ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে খর্ব করতে পশ্চিমা শক্তি ও এনজিওকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা সহযোগিতা করছেন। এতে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র্য নিরসনে ড. ইউনূসের প্রচেষ্টার নিন্দা জানানো হয়। দাবি করা হয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইসলামের মৌলিক নীতির বিরোধী। কারণ, ইসলামে সব ধরনের সুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সাত পৃষ্ঠার দীর্ঘ দ্বিতীয় প্রবন্ধটি ছিল আরও ভয়ঙ্কর। এতে জামায়াতে ইসলামীর ফাঁসি হওয়া নেতা মতিউর রহমান নিজামীর প্রশংসা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফাঁসি হয় এই জামায়াত নেতার।

মজার ব্যাপার হলো, দীর্ঘ এই প্রশংসাসূচক প্রবন্ধে এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের কথা বিন্দুমাত্র উল্লেখ করা হয়নি।

বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেন যে, ‘সংগ্রামী জননেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী’ শিরোনামের দ্বিতীয় প্রবন্ধটি ভারতের মাটিতে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত এ ধরনের একমাত্র প্রবন্ধ হতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ হলো কোনও ভারতীয় নেতা এই প্রবন্ধের বিষয়ে কোনও তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেননি। অনেকেই এটাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে মনে করেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের এই পূর্ণ নীরবতা, প্রতিবেশী দেশের বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতার প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন ছিল সবচেয়ে অস্বাভাবিক। ন্যূনতম এই কথা বলা যায়।

পুনরায় উল্লেখ করা যায় যে, নিজামীর ফাঁসির নিন্দা জানিয়েছিল পাকিস্তান। পাকিস্তান নিন্দা প্রস্তাবে উল্লেখ করে, নিজামী পাকিস্তানের সংবিধান ঊর্ধ্বে তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করছিল। যুদ্ধাপরাধের বিচার করা বাংলাদেশের জন্য পাকিস্তানকে অপবাদ দেওয়ার প্রয়াস ছাড়া কিছু নয় বলেও উল্লেখ করেছিল ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের এই নিন্দা প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করে জবাব দেয় ঢাকা। পাকিস্তান ছাড়া যেসব দেশ প্রতিক্রিয়া দেখায় সেগুলোর মধ্যে ছিল তুরস্ক। ২০১২ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লা গুল জামায়াতের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার না করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তুরস্কের কথা বলার অধিকার নেই জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

নিজামীর ফাঁসির রায়ে আরও বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায় তুরস্ক। নিজামীর বিচারকে অগণতান্ত্রিক বলে উল্লেখ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। ঢাকা থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতও প্রত্যাহার করে আঙ্কারা। এরদোয়ান ওই সময় মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করলেও দেশটিতে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর গুলেনপন্থীদের বিচারে তিনি সংবিধান সংশোধন তা মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহাল করেছেন।

কূটনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও বিশ্লেষকরা একমত যে, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। উভয় দেশই পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতর করতে চায় না। এক দশকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছে দেশ দুটি।

বাংলাদেশ-তুরস্কের সম্পর্ক এখনও জটিল পর্যায়ে থাকলেও তুরস্ক যে জামায়াতের শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থক বা আঞ্চলিক শক্তি এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই।

এক বিশ্লেষক বলেন, জনগণের পড়ার জন্য প্রকাশ্যে নিজামীর প্রশংসাসূচক সাত পৃষ্ঠার কোনও প্রবন্ধ প্রকাশ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তা হয়েছে।

দিল্লির কথা উল্লেখ না করে তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোতে ঢাকা ও কলকাতার এ ধরনের বিষয়ে আরও নজরদারি চালাতে হবে। বাংলাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়