ফারমিনা তাসলিম : প্রতিটা পদে পদে বকশিস ছাড়া মিলছে না সরকারি হাসপাতালের কর্মচারীদের সেবা। কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশের ৭ শ’র বেশি সরকারি হাসপাতালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অন্তত ৩৫ হাজার পদ খালি থাকায় জিম্মি হচ্ছেন রোগীরা। আইনী জটিলতার কারণে এইসব পদে নিয়োগও দেয়া যাচ্ছে না।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ওয়ার্ডের ভেতরে ঢুকতে হলে নিরাপত্তা কর্মীদের বকশিস ছাড়া ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলে না।
একই চিত্র দেখা যায় ঢাকা মেডিকেলেও। বিশেষ বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মচারী হাসপাতাল থেকে কোনো বেতন পান না । হাসপাতালের কর্মচারীরা ভরসা করে রোগী ও তাদের স্বজনের বকশিসের ওপর।
সরকারি হাসপাতালের একজন কর্মচারী বলেন, আমাদের কোন বেতন নেই। রোগীদের বকশিস দিয়ে চলে আমাদের জীবন। আমরা এখানে বিভিন্ন ধরণের কাজ করি। সরকার যদি নিয়োগ দেয়, তাহলে আমাদের একটা গতি হতো।
দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতালগুলোর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৪’শ পদ খালি থাকায়, অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছে কয়েক’শ কর্মী। আর এভাবেই চলছে ৭ শ’রও বেশি সরকারি হাসপাতাল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, লোকজনের ঘাটতি থাকার কারণে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জনবলপ্রাপ্তির জন্য আমদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮৫-র আলোকে সরকারি হাসপাতালে কর্মচারি নিয়োগ দেয়া হতো। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশে সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর সঙ্গে সে বিধি বাতিল হওয়ায়, গত ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সে নিয়োগ।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে নতুন নিয়োগবিধি। এটি পাশ হলেই শুরু হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রশাসনের পরিচালক সমীর কান্তি সরকার বলেন, মাস খানেক থেকে মাস দেড়েকের মধ্যে আমাদের আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটা নতুন নিয়োগবিধি আমরা পেতে পারি। এ বিধির আলোকে আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারব।
দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদ প্রায় ৭০ হাজার। এর ৫০ ভাগই রয়েছে খালি।
সূত্র- ইনডিপেনডেন্ট টিভি
আপনার মতামত লিখুন :