শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:২১ সকাল
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্বে মানব অঙ্গের অবৈধ ব্যবসা ১৭০ কোটি ডলার

ডেস্ক রিপোর্ট : বিশ্বে প্রতিবছর মানব অঙ্গ বেচাকেনায় অবৈধ ব্যবসা হয় প্রায় ৮৪০ মিলিয়ন থেকে ১.৭ বিলিয়ন ডলারের। বছরে অবৈধভাবে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয় ১২ হাজারটি।

সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় মানবদেহের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এগুলো হচ্ছে কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় কিডনি। কালোবাজারে এটির দামও পড়ে অনেক কম। কারণ এ অঙ্গ সমাজের দরিদ্র মানুষই বিক্রি করে থাকে। সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) ‘ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম অ্যান্ড দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানব অঙ্গ বেচাকেনা বিশ্বের একটি লোভনীয় ব্যবসা। বিশ্বে প্রতিবছর কিডনি প্রতিস্থাপন ঘটে ৭ হাজার ৯৯৫টি। লিভার ২ হাজার ৬১৫টি, হার্ট ৬৫৪টি, ফুসফুস ৪৬৯টি, অগ্ন্যাশয় ২৩৩টি।

সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৯৬৬টি অঙ্গ প্রতিস্থাপনে ব্যবসা ৮৪০ মিলিয়ন ডলার থেকে ১.৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
বিশ্বে প্রতিবছর যে পরিমাণ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটে, এর ১০ শতাংশ হয় অবৈধভাবে। ২০১৪ সালে বিশ্বে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজারটি অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়। এর মধ্যে ১২ হাজার প্রতিস্থাপন হয়েছে অবৈধভাবে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছে কিডনি। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে লিভার, হার্ট, ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়। ২০১৪ সালে মোট ৮ হাজার কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় অবৈধভাবে।

তবে আরেক প্রতিষ্ঠান অরগান ওয়াচ এক গবেষণায় দেখিয়েছে, প্রতিবছর কমপক্ষে ১০ হাজার কিডনি অবৈধভাবে বেচাকেনা হয়। সে হিসেবে ৮ হাজারের হিসাবটি কমই বলা হয়েছে।

জিএফআইর প্রতিবেদনে বলা হয়, কিডনি যেহেতু দেওয়া যায়, সে কারণে দালালদের প্ররোচনায় পড়ে দরিদ্র মানুষ সহজেই এ অঙ্গ বিক্রি করে দেয়, যা অনেক কম দামে কিনে নেওয়া হয়। এর বিপরীতে অন্য অঙ্গগুলোর দাম দ্বিগুণ বা আরো বেশি। কারণ এ অঙ্গগুলো জীবিত মানুষের পক্ষে পুরোটা দেওয়া কঠিন। আংশিক দেওয়া যায় কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিডনি বিক্রির বিনিময় বাংলাদেশের একজন ক্রেতা গড়ে পেয়ে থাকেন ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ডলার, ভারতের একজন বিক্রেতা পান ১ হাজার থেকে ৬ হাজার ডলার, বেলারুশের বিক্রেতারা পান ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার, ব্রাজিলে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার, কম্বোডিয়ায় ৩ হাজার ডলার, চীনে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত। কলম্বিয়ার নাগরিকরা কিডনি বিক্রিতে পেয়ে থাকেন ১ হাজার থেকে ৩ হাজার ডলার, কোস্টারিকার বিক্রেতারা সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ৬ হাজার ডলার, মিসরের বিক্রেতারা ২ হাজার ডলার, ইন্দোনেশিয়ার বিক্রেতারা ৫ হাজার থেকে ২৩ হাজার ডলার, ইরাকের বিক্রেতারা পান গড়ে ১ হাজার ডলার, ইসরায়েলের বিক্রেতারা পেয়ে থাকেন ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার ডলার, জাপানের বিক্রেতারা ১৬ হাজার ডলার, জর্দানের বিক্রেতারা পান ৫০০ ডলার থেকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিডনি বেচাকেনায় বিক্রেতারা মূল্য প্রাপ্তি ও ক্রেতার মূল্য প্রদানের মধ্যে বড় ধরনের বৈষম্য রয়েছে। দেখা যায় একজন ক্রেতা কিডনির বিনিময়ে যে অর্থ দেন বিক্রেতা তার বিনিময়ে মূল্য গড়ে ১০ শতাংশেরও কম পান। এ ছাড়া কিডনি বিক্রয় মূল্য পাওয়ার দিক থেকে উন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে একটি কিডনি বিক্রি করে গড়ে পাওয়া যায় ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডলার। এর বিপরীতে নেপালে কিডনি বিক্রিতে পাওয়া যায় মাত্র ২০০ থেকে ৯০০ ডলার পর্যন্ত। পাকিস্তানে কিডনি বিক্রিতে পাওয়া যায় দেড় হাজার থেকে ২১০০ ডলার পর্যন্ত। ফিলিপাইনে কিডনি বিক্রিতে পাওয়া যায় ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার ডলার পর্যন্ত।

সাম্প্রতিক পাচারকারীরা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের কাছ থেকে কিডনি কিনছে তাদের ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে। এ ছাড়া দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কিডনি ক্রেতাদের সঙ্গে দালালদের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। এদের মাধ্যমেই মূলত দরিদ্র শ্রেণি থেকে কিডনি বিক্রেতা বের করা হয়। অনেকেই অর্থের প্রয়োজনে কিডনি বিক্রি করে আবার অনেককে পাচার করে এনে তাদের কিডনি ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে নেওয়া হয়।

অবৈধ এ ব্যবসায় দালাল ছাড়াও কয়েকটি শ্রেণি জড়িত থাকে। এর মধ্যে রয়েছে বিক্রেতা, ক্রেতা, প্রতিস্থাপন টিম, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ইত্যাদি। সূত্র : কালেরকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়