শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০২:৫৫ রাত
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০২:৫৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিজয় উল্লাসে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু এখনো কাদাঁয়

মবিনুর রহমান : বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন বি.কম। যিনি দেশ মাতৃকার টানে ঢাকায় প্রথম গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। পাশাপাশি সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মুত্তিযোদ্ধা একাত্তর-এর সাধারণ সম্পাদক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ২নং সেক্টরের অধীনে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মোশারফ হোসেন বলেন, আমি তখন ছাত্র ছিলাম। কলেজে পড়ি। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আমাকে মুগ্ধ করলো। ভাবছি- দেশের জন্য কিছু একটা করতে হবে, কিন্তু কীভাবে করবো। ৮ মার্চের রাতে পরামর্শের জন্য নাজিরাবাজার গিয়ে হাজির হলাম মরহুম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের কাছে।

তখন তিনি পরামর্শ দিলেন- তোমার বাড়ির কাছেই তো বিডিআর আছে, তাদের কোন এক সুবেদারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নাও। আমাদের এলাকাতেই ভাড়া থাকতেন এক সুবেদার। তার সহযোগিতায় তখনই বন্ধুরা মিলে প্রথম লালবাগ কেল্লার মাঠে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু করি। আমাদের প্রশিক্ষণের খবর শুনে ১৪ মার্চ বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম আমাদের অভিবাদন গ্রহণ করলেন। ১৫ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী অভিবাদন গ্রহণ করলেন। তারপর স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আমাকে ডেকে নেয়া হল মানিকগঞ্জে।

২ নং সেক্টর কমান্ডার হালিম চৌধুরী আমাকে দেখে বললেন, ঢাকার ছেলে আমি পাইছি। তখন তিনি আমাকে ঢাকায় গ্রেনেড রাখার দায়িত্ব দিলেন। একজন সোর্স গ্রেনেড নিয়ে আসতেন। গ্রেনেডের সাথে একটা সাংকেতিক চিঠি থাকতো, তাতে লেখা- চারটি কামরাঙ্গা তোমার কাছে পাঠালাম। তুমি এটাকে সুন্দরভাবে রাখার চেষ্টা করো। আবার গ্রেনেড নেবার সময়ও সাংকেতিক চিঠি আসতো। তাতে লেখা থাকতো, তোমার মায়ের কাশি হয়েছে, চারটি পাকা কামরাঙ্গা দিয়ে দাও।

এরপর শুরু হলো এলাকাগুলোতে রাজাকারদের উৎপাত। তারা আমাদের পুরান ঢাকার লালবাগ শশ্মানঘাটে ক্যাম্প বসালেন। এরপর পাক মিলিটারী এসে তাদের সাথে যোগ দিলেন। তখন আমরা তিন বন্ধু মিলে ৩ দিন সেই পাক বাহিনীদের গতিবিধি লক্ষ্য করলাম। ৪ দিনের রাতে সেখানে আমরা গ্রেনেড হামলা করলাম। সে হামলায় পাকবাহিনী অনেক ক্ষতি হলো। এরপর আর এলাকায় থাকা সম্ভব হলো না।

নভেম্বরে চলে গেলাম মানিকগঞ্জে। মানিকগঞ্জে শেষ সীমানায় সিঙ্গাইর নদীর পাড়ে আমরা অবস্থান করলাম। ওপারে নবাবগঞ্জ দোহার। সেখানে আমাদের তুমুল যুদ্ধ হলো পাক হানাদার বাহিনীর সাথে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হবার খবর আমরা রাত ৯টায় পেলাম। আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমরা পায়ে হেঁটে ঢাকায় রওনা হলাম।

পরদিন ভোরে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে এসে পৌঁছালাম। একটি খেয়া নৌকায় আমরা প্রায় ৫০ জনের মত উঠে পড়লাম। তখন বিজয়ের আনন্দে কারো আর দেরি সইছিলো না। কখন পরিবারের প্রিয় মুখগুলো দেখতে পাবো। কিন্তু নদীর মাঝে এসে আমাদের নৌকাটা ডুবে গেল। নদীতে ডুবে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেন। বিজয়ের আনন্দ এমন ছিল যে- এই খবর শুনে অনেকে জ্ঞান হারিয়েছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়