ফারমিনা তাসলিম : মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী এবং রাজাকারদের হাতে নির্যাতিত বীরাঙ্গনাদের জীবন পাল্টে গেছে। ২০১৫ সালে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি গেজেট প্রকাশের পর থেকেই মাসিক ভাতা পাচ্ছেন তারা।
দেড় বছর আগে জলো বেওয়া নামে বীরাঙ্গনা ভিক্ষা করে , বাড়ি বাড়ি কাজ আর কখনো অন্যের জমিতে ধান কুড়িয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর নিয়মিতই পাচ্ছেন ভাতা। পেয়েছেন সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধাও। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা জলো বেওয়া বলেন, ‘হাঁস-মুরগী পালন করছি, ধান-কুড়ো ভাঙছি, মাছ ধরেছি এগুলো কাম করেছি। এগুলো করে পেট চালিয়েছি, ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। আর এখন ভাতা পাচ্ছি, এগুলো দিয়ে বসে বসে খাচ্ছি।’
জলো বেওয়ায়র মত গোমস্তাপুর উপজেলার আরো ১০ বীরাঙ্গনার পরিবার এখন অভাব অনটন কাটিয়ে উঠেছেন। সরকারের দেয়া ভাতায় ভাল ভাবেই কাটছে তাদের জীবন।
এ সম্পর্কে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা আয়েশা বেগম বলেন, ‘খাওয়ার চাল-ডাল জুটাতে পারি নাই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে চলেছি। এখন ভাতা দিচ্ছে খুবই সুখ। এখন কোন অশান্তি নেই।’
স্বীকৃতি পাওয়া সকল বীরঙ্গনা প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। এছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ১০ কাঠা করে জমি দেয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রকল্পও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব রায়হান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন শুধু বীরাঙ্গনা না অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন এবং অন্যান্য বিষয়াদি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে সজাগ রয়েছি।’
মুক্তিযুদ্ধের ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালে প্রথম দফায় যে ৪১ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান তাদের মধ্যে গোমস্তাপুর উপজেলারই রয়েছে ১১ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন একজন।
সূত্র - ইনডিপেনডেন্ট টিভি
আপনার মতামত লিখুন :