নূহ-উল আলম লেনিন : আমাদের স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হলো। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা বা প্রত্যাশা ছিল, তার যতটুকু পূরণ হয়েছে, তারচেয়ে বেশি পূরণ হতো। দুঃখের বিষয়, আমাদের জীবন থেকে ২১টি বছর হারিয়ে গেছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ২১ বছর তার সাথে ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত আবার ৫ বছরসহ ২৬টি বছর আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে। এই দেশের স্বাধীণতার চেতনা সেই সময় পথভ্রষ্ট হয়েছে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, তারা শুধু যে বঙ্গবন্ধুর ঘাতক তা নয়, তারা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে, দুর্নীতি করে, এই দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তারা মুছে ফেলে দেশকে পাকিস্তান করার চেষ্টা করেছে। এর ফলে আমাদের দেশ স্বাধীনতার পরে উন্নত করার যে সম্ভাবনা গড়ে উঠেছিল তা ব্যাহত হয়েছে। জিয়াউর রহমান, এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া, খন্দকার মুস্তাক এদেশ শাসনের যে কুফল তৈরি করেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেগুলোকে কাটিয়ে তুলেছেন। আমাদের থেকে সেই ২৬টি বছর না হারালে হয়তো এই দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হতো। দেশ আরও এগিয়ে যেত। কিন্তু অভিশপ্ত বছরগুলো আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে। একটি আশার ব্যাপার দেরিতে হলেও , এই দেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বিরাট সাফল্য। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশ এখন নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশ। আমাদের জিডিপি এখন ১৬’শ ডলারের উপরে উঠেছে। আমাদের জনগণের মান উন্ন্য়ন হয়েছে। দেশের দারিদ্র সীমা ২৪ পার্সেন্টে নেমে এসেছে। আমাদের নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে। আমাদের দেশ আন্তর্জাতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সুনাম, তার সততার স্বীকৃতি এসেছে। বাংলাদেশে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে। শিল্প উন্নয়ন হয়েছে। এই দেশের তৈরি পোশাক বাইরে যাচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেয়েছে। মোট কথা, আমরা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছি। এই দেশের নারীদেরও অগ্রগতি হচ্ছে। সরকার নারীদের উন্নতির জন্য কাজ করছে। এখন স্কুলে প্রায় ৫০ পার্সেন্ট মেয়ে শিক্ষার্থী। সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এই সব কিছু মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের জীবন থেকে যদি ২৬টি বছর না অপচয় হতো, তাহলে এই দেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতো। আরও বিশ বছর আগেই এখন যে অর্জনগুলো আছে, সেগুলো অর্জিত হতো। বিলম্ব হলেও, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে একটি রোল মডেল হয়ে দাড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল সেটা পূরণ হচ্ছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবারও এগিয়ে যাবে।
পরিচিতি : সাবেক সভাপতিমন্ডলির সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :