শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডায়াবেটিস ও পুরুষের অক্ষমতা

 

ডা. জাকির হোসেন : রনি (ছদ্ম নাম) ৩৪ বছরের ভরা যৌবনের একজন ব্যাংক কমকর্তা। স্বামী-স্ত্রী দুজন একই ব্যাংকের অফিসার পদে কর্মরত। রনি সাহেব আমাকে একদিন ফোনে কিছু একটা বলতে চান। পারিবারিক কিছু একটা খুব সমস্যা হচ্ছে। তিনি আমার কাছে সময় চেয়ে নিলেন। ব্যাংক থেকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে সস্ত্রীক তিনি আমার কাছে এসে উপস্থিত। তিনি বলতে শুরু করলেন , তিনি আগের মত সক্ষম নেই। এ নিয়ে পারিবারিক জীবনে প্রতিনিয়ত ঝামেলা বাড়ছে। ভদ্র লোকের শারীরিক ওজন অনেক বেশি ছিল। প্রথম দিকে তিনি তার ওজনকেই এই জন্য দায়ী মনে করতেন। কিন্তু সমস্যার দ্রুত অবণতি হচ্ছে দেখে স্ত্রীর পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠার পর তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। আমি তাকে কিছু প্রশ্ন করার পর দেখলাম ডায়াবেটিসের সব গুলো উপসর্গ তার মধ্যে বিদ্যমান। আমি তাকে বললাম, আপনি মনে হয় ডায়াবেটিস আক্রান্ত। তিনি বিশ্বাস করতে চাইলেন না। আমি তাকে সুগার পরীক্ষা করতে দিলাম। দেখা গেল রক্তে সুগার ১৯.৬ মিলি মোল/ লিটার। ভদ্র লোকের চোখে মুখে একটু আতংকের ছাপ ভেসে উঠল। তাকে সাময়িক সুগার নিয়ন্ত্রনের জন্য কিছু এন্টি ডায়াবেটিক ওরাল মেডিকেশন দিয়ে আরো কিছু পরীক্ষা দিয়ে এক সপ্তাহ পর দেখা করতে বললাম। ডায়াবেটিস আমাদের সমাজে অতি পরিচিত রোগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এক সময় শহরাঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলেও এখন প্রায় সবোর্ত্র এর বিস্তার লাভ করেছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এমন পরিবার খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে, যেখানে কেউ না কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়নি। এক সময় চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটা সেøাগান প্রচলিত ছিল। তা হলো রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখলে ডায়াবেটিস কোন রোগ নয়। কিন্তু কথাটি এখন আর পুরো সত্য নেই। ডাযাবেটিস এখন নীরব ঘাতক হিসেবে সমাজে আর্ভিভাব ঘটছে। এখন দেখা যাচ্ছে, ডায়াবেটিসের বয়স যত বেশি তার ক্ষতির পরিমাণও তত বেশি। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি অল্প বয়সে ডায়াবেটিক আক্রান্ত হলে, এই রোগের সমূহ ক্ষতির পরিমাণও বেশি। তার মধ্যে যদি দেহের সুগারকে নিয়মিত চেক করে সব সময় নিয়ন্ত্রনে রাখা না হয়, তবে ডায়াবেটিসের দৈহিক জটিলতাগুলো খুব অল্প বয়সে মহামারী হয়ে দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস মানুষের শরীরের অটোনমিক নার্ভাস (অঁঃড়হড়সরপ হবৎাড়ঁং ংুংঃবস) ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে মানুষের দৈহিক চালিকা শক্তি নিস্ক্রিয় হতে থাকে। ডায়াবেটিস এমন এক রোগ যার রয়েছে মারাত্মক সব দৈহিক জটিলতা। পুরুষের অক্ষমতা তার মধ্যে একটি। ডায়াবেটিস পুরুষের এই ক্ষতি সাধারণত দুইভাবে করে থাকে। বাড়তি সুগার পুরুষাঙ্গের সাথে সম্পর্কিত রক্ত প্রবাহের নালীগুলোকে সংকোচিত করে ফেলে এবং স্নায়ু তন্ত্রগুলো অকেজো করে দেয়। তাই সাধারণত ডায়াবেটিস দ্বারা পুরুষের অক্ষমতার স্বীকার হলে এই জটিলতাকে চিকিৎসা করে খুব একটা সুফল পাওয়া যায় না। তাই অল্প বয়সে ডায়াবেটিস রোগীর প্রয়োজন সচেতনতা। তাকে ডায়াবেটিস রোগ এবং তার জটিলতা সম্পর্কে ধারনা দিতে হবে। চিকিৎসকের বেধে দেওয়া নিয়মের মাঝে চলতে তাকে উৎসাহিত করতে হবে। একমাত্র সচেতনতা এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবন ধারাই এই নীরব ঘাতককে সহজে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। তা না হলে, সমাজের একটা বৃহত্তর অংশ ডায়াবেটিসর এই জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে, সমাজ, পরিবার ও পরিজন থেকে বিচ্যুত হতে পারে।
লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়